দাম্পত্য জীবনে রয়েছে তিনটি কন্যাসন্তান। আবার কন্যাসন্তান প্রসব করলে তালাক দেবেন স্বামী! এবারও জন্ম হয়েছে মেয়ের। তাই হাসপাতালে রেখেই পালিয়ে গেলেন মা-বাবা ও স্বজনরা। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। বিকালে বিষয়টি জানাজানি হয়।
হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, প্রসববেদনা উঠলে সকাল ৭টা ৪৩ মিনিটে আলমডাঙ্গা উপজেলার কেষ্টপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী পাপিয়া খাতুনকে (হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দেওয়া ঠিকানায় এই নামে কাউকে পায়নি পুলিশ) সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
সেখানেই কন্যাসন্তান প্রসব করেন পাপিয়া। পরে তাকে ভর্তি করা হয় গাইনি ওয়ার্ডে। কিছুক্ষণ পর নবজাতককে আলমডাঙ্গা উপজেলার ছত্রপাড়া গ্রামের বিলকিস বানু নামে এক নারীর কাছে রেখে পালিয়ে যান আলমগীর-পাপিয়া দম্পতি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা-তুজ-জোহরা, জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক সিদ্দিকা সোহেলী রশীদ ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী। পরে নবজাতককে সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ (নার্স) মালেকা খাতুনের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা ওই নবজাতকের নামকরণ করেন ‘পুষ্প’।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘ওই দম্পতির তিন কন্যাসন্তান রয়েছে। আবারও কন্যাসন্তান হলে স্বামী তালাক দেবে বলে জানায় পাপিয়া। তাই আবারও কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় তাকে ফেলে পালিয়ে যায় ওই দম্পতি। আপাতত হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ (নার্স) মালেকা খাতুনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে নবজাতকটি।’
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, ‘ওই দম্পতি হাসপাতালে যে নাম ও ঠিকানা দিয়েছেন তা যাচাই করা হয়েছে। তারা ভুল তথ্য দিয়েছেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও ছবি দেখে ওই নারী ও তার স্বজনদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, ‘নবজাতকটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’