যশোরের চৌগাছায় চাঁদা না পেয়ে বাঁওড় দখলের চেষ্টা করেছে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। ওই সময় সমিতির সদস্যদের মাছ শিকারের জাল কেটে নষ্ট করে দেওয়া হয়। শুক্রবার (২১ জুন) সকালে চৌগাছা উপজেলার বল্লভপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২০ জুন) যেকোনও সময় বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে এ আশঙ্কায় চৌগাছা থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) আবেদন করেন বল্লভপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক তারক কুমার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, ‘ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে ৬ বছর মেয়াদে (১৪৩১-১৪৩৬ বঙ্গাব্দ) চৌগাছার বল্লভপুর বাঁওড় জলমহালটি ইজারা নিয়ে চাষ করছে বল্লভপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। এর আগে তিন বছর মেয়াদে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে সমিতি বাঁওড়ে মাছ চাষ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার কিছু দুর্বৃত্ত জোরপূর্বক বাঁওড়টি দখলের পাঁয়তারা করছে।’
বল্লভপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক তারক কুমার বিশ্বাস আরও বলেন, ‘সম্প্রতি অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে আসছে সন্ত্রাসীরা। আমাদের ক্ষতি করতে পারে, এই আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার চৌগাছা থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। আজ সকালে সমিতির সদস্যরা বাঁওড়ে মাছ শিকারের প্রস্তুতি নেয়। এ সময় বল্লভপুর গ্রামের ফকির চাঁদের ছেলে আইজেল হক, মতলেব মণ্ডলের ছেলে জিন্নাত মণ্ডল, নিমাই বিশ্বাসের ছেলে কার্তিক বিশ্বাস, হাশেম আলীর ছেলে সবদারের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হানা দেয়। তারা হুংকার দেয় তাদের কোটি টাকার চাঁদা পরিশোধ না করে বাঁওড়ে মাছ শিকারে নামলে হাত-পা কেটে নেওয়া হবে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক চৌগাছা থানা ও উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই সন্ত্রাসীরা প্রায় সাত লাখ টাকা মূল্যের জাল কেটে নষ্ট করে দেয়। একই সঙ্গে সমিতির সদস্যদের লাঞ্ছিত করে।’
এ বিষয়ে বল্লভপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুমার রায় বলেন, ‘নবনির্বাচিত এক জনপ্রতিনিধির ইন্ধনে সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের অত্যাচারে আমরা চরম আতঙ্কে দিন পার করছি।’
এ বিষয়ে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান ইজারাদাররা আজ সকালে মাছ ধরতে গেলে অপর একটি পক্ষ বাঁওড়ে যায়। এতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিক পুলিশ জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দুপক্ষকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডেকেছেন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।’