কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পদ্মা নদীতে মাছ ধরা নৌকার তলা ছিদ্র করাকে কেন্দ্র দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার জের ধরে উভয়পক্ষের অন্তত ১২টি ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামের আদালত প্রামাণিক, তার ছেলে জিসান প্রামাণিক, রাজিব, রাকিব, শুভ, রাহিম, ছালাম কাজী, মিজানুর রহমান মন্টু, বিল্লাল হোসেন, শহীদ হোসেন, মনটু কাজী, ঝন্টু কাজী, জিন্দার শিকদার, সাইদু্ল শিকদার ও সাজেদা খাতুন। আহতরা কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কসবা গ্রামে মন্টু কাজী গ্রুপের সঙ্গে আদালত প্রামাণিক গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। কাজী গ্রুপের লোকজন চাষাবাদের পাশাপাশি পদ্মা নদীতে মাছ ধরার কাজ করেন। নদীতে তাদের বেশকিছু ডিঙি নৌকা রাখা হয়েছে। শনিবার দুপুরে প্রামাণিক গ্রুপ কাজী গ্রুপের পাঁচটি নৌকার তলা ছিদ্র করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। পরে এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। এ ছাড়াও বেশকিছু বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
আদালত প্রামাণিক বলেন, ‘কাজী গ্রুপের লোকজন আমাদের একটা ছেলে আটকে রেখেছিল। তা জানতে গেলে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। আমাদের কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হবে।’
অপরপক্ষের জাদু কাজী বলেন, ‘প্রামাণিকের লোকজন আমাদের নৌকার তলা ছিদ্র করে দিয়েছে। এক মাস পাহারা দিয়ে আজ সালাম নামের একজনকে ধরে আটক করেছিলাম। আটকের কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে প্রামাণিক গ্রুপের লোকজন ধারালো অস্ত্রসহ আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের ১০-১২ জন আহত হয়েছেন। আমারও থানায় মামলা করবো।’
প্রামাণিক গ্রুপের এক নারী বলেন, ‘আমাদের লোকজন সব হাসপাতালে। সেই সুযোগে জাদু কাজী, মাদু কাজীসহ ১৫-২০ জন এসে আমাদের সব ঘর ভাঙছে। গরু ও মালামাল নিয়ে গেছে।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, ‘মাছ ধরা নৌকা ছিদ্র করাকে কেন্দ্র দুপক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়ে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’