যশোরে পালক ছেলের বিরুদ্ধে মাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হত্যায় জড়িত সন্দেহে ওই ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। শহরের মণিহার মোড়ের ফলপট্টি এলাকায় শামস মার্কেটের দোতলায় শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকালের মধ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা পুলিশের।
পুলিশ জানায়, প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে শনিবার সকালে ওই বাসায় গিয়ে ঘরের দরজা খোলার পর মায়ের রক্তাক্ত লাশ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ। ওই সময় তার পালক ছেলে ঘরে ছিল।
নিহত নারীর নাম সুলতানা খালেদা সিদ্দিকী রুমি (৬২)। পুলিশ বলছে, তাকে মাথায় আঘাতের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তার পালক ছেলে শেখ শামসের (২০) হাতে খুন হতে পারেন। এ ঘটনায় শেখ শামসকে আটক করা হয়।
নিহতের ভাতিজা জোবায়ের সিদ্দিকী ও ভাগনে এসএম মাহমুদ জানিয়েছেন, শামস মাদকসেবী। মাকে হত্যার পর লাশ ঘরেই রেখে দিয়েছিল। কাউকে ঘরে ঢুকতে দেয়নি। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ২টা থেকে আড়াইটার দিকে রুমির ঘর থেকে তারা চিৎকার শুনেছেন। ধারণা করছেন, ওই সময়ে শামস তার মাকে হত্যা করেছে।
নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে তিন মাস বয়সী শামসকে খুলনা থেকে দত্তক এনেছিলেন রুমি ও শেখ শাহজাহান দম্পতি। শাহজাহান প্রায় আট বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। ফলপট্টি এলাকায় তাদের শামস মার্কেট রয়েছে। মার্কেটের দোতালায় রুমি ও তার পালক সন্তান শামস থাকতেন। অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল রুমির পালক সন্তানটি মাদকসেবী।
মার্কেটের দোকানি জাকির হোসেন জানান, নিচতলার দোকানগুলোর লাইনে পানি না পাওয়ায় শনিবার সকাল ১০টার দিকে দোতলায় গিয়ে চাচির (রুমি) খোঁজ করেন। তখন ঘরের ভেতরে শামস ছিল। তিনি তাকে জানান, মা বাড়ি নেই, খুলনায় গেছে। দুপুরে আবার খোঁজ নিতে গেলে শামসের কথা তার কাছে উল্টাপাল্টা মনে হয়। তিনি মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ডাকেন। এরপর জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে শামস একই কথা বললেও দরজা খুলতে চাননি। অনেক জোরাজুরির পর দরজা খুললে দেখা যায়, ঘরের মেঝেতে চাচির লাশ পড়ে আছে। লাশের নিচের মেঝে রক্তাক্ত। এরপর লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পালক ছেলেকে আটক করা হয়েছে। ছেলেটি তার মায়ের মাথায় আঘাতের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে ধারণা করছি আমরা।’