জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি ক্ষমতার উৎস দিল্লি নয়, লন্ডনও নয়। ক্ষমতার উৎস বসুন্ধরা নয়, এস আলম বা কোনও ব্যবসায়ী নয়। ক্ষমতার উৎস জনগণ এবং জনগণ যদি পাশে থাকে তাহলে দিল্লিতে পালাতে হয় না, লন্ডন থাকতে হয় না। জনগণ পাশে থাকলে ৫৬ হাজার বর্গমাইলে জন্ম এবং মৃত্যু হয়।’
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকাল ৫টায় গাংনী বাসস্ট্যান্ডে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রার সংক্ষিপ্ত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আগে যারা নেতৃত্বে ছিল তারা দেশ থেকে টাকা পাচার করে বিদেশে আমোদ-ফুর্তি করেছে। তারা নিজেরা আমাদের বড় বড় জ্ঞান দিতো। অন্যের ছেলেকে দিয়ে রাজনীতি করাতো নিজের ছেলেকে বিদেশে পড়াতো। দুর্নীতির টাকায় বিদেশে পড়াশোনা করে এসে নিজে দেশে এসে নেতা হতো। এখন আমাদের সময় এসেছে, আমাদের ভূমি থেকে যারা বেড়ে উঠবে ৫৬ হাজার বর্গমাইলে যাদের উৎপত্তি হয়েছে, বিকাশ হয়েছে, প্রিয় গাংনীর তরুণ ছাত্রবৃন্দকে হাইব্রিড নেতাদের থেকে দূরে থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগামীতে আমরা নেতৃত্ব নির্বাচন করবো যোগ্যতা দেখে। কে কতটুকু জনপ্রিয়, জনগণের কাছে যাচ্ছে, জনগণের ভাষা বোঝে, জনগণের সমস্যা বোঝে, কতটা বাংলাদেশকে ধারণ করে এসব বিচারে। আমাদের দেশে একশ্রেণির নেতা উৎপাদন হয়, যারা নির্বাচনের আগে বস্তায় বস্তায় টাকা নিয়ে এলাকায় ঢুকে। তারা নির্বাচনের আগের রাতে পোলিং এজেন্ট, থানার ওসি-এসপিকে কিনে নেয়। আপনাদের সচেতন হতে হবে, যে নেতা নির্বাচনের আগে টাকা নিয়ে আসবে, আগের রাতে কিছু টাকা দেবে আর পাঁচ বছর আপনাকে দিয়ে গোলামি করাবে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এনসিপি সংস্কারে এবং সংসদে বাংলাদেশকে ইতিবাচক পরিবর্তন করবে। কিছু রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয়েছে রাজনীতিকে এবং এই নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে। তারা সংস্কার চায় না, বিচারও চায় না। অথচ তারা এখন নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে। তারা যদি নির্বাচন চাইতো তাহলে সংস্কার এবং দ্রুত বিচার করতে চাইতো। বিচার ও সংস্কার অতি দ্রুত শেষ করতে চাইতো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পিন্ডির ওপরে, দিল্লির ওপরে, লন্ডনের ওপরে বা আমেরিকার ওপরে নির্ভর করতে চাই না। আমাদের দেশটাকে কোনও রাজনীতিবিদ বা ব্যবসায়ীর কাছে বর্গা দিইনি। আমরা জনগণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করবো। আমরা জনগণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে জনগণের জন্য রাজনীতি করবো। যখন রাজনীতিবিদরা ব্যবসায়ীদেরকে তাদের রাজনীতি বন্ধক দেয় তখন ব্যবসায়ীদের মতো করে রাজনীতির পরিচয় ধারণ করতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম সত্য বলতে ভয় পায় না। আমরা তরুণ প্রজন্ম বিশ্বাস করি, হয় সাদা না হয় কালো। সাদা এবং কালোর বাইরে কোনও কিছু নাই। আমাদের আগের প্রজন্ম ভণ্ডামিকে নাম দিয়েছে কৌশল, মিথ্যাকে নাম দিয়েছে রাজনীতি, প্রতারণাকে নাম দিয়েছে স্ট্রাটেজি। তরুণ প্রজন্মকে পরবর্তী বাংলাদেশ গড়তে হবে। আমরা তাদের হাতে দেশটাকে তুলে দিতে পারবো না, যারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। কোনও দেশের, কোনও দলের বা কোনও ব্যক্তির গোলামি করার জন্য এনসিপি তৈরি হয়নি।’
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অষ্টম দিনে মেহেরপুরের গাংনী সদর ও মুজিবনগরে পদযাত্রা ও পথসভা করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার, জেলা এনসিপির যুগ্ম সম্পাদক সাকিল আহম্মেদ প্রমুখ।