X
সোমবার, ১২ মে ২০২৫
২৯ বৈশাখ ১৪৩২

‘অহন আর আমাগোর কোনও কষ্ট নাই’

আতাউর রহমান জুয়েল, ময়মনসিংহ‌
২৫ এপ্রিল ২০২২, ২৩:০২আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২২, ২৩:০২

‘আমরা ছিলাম উদ্বাস্তু। আমাগো আগে জমি আছিলো না, ঘরও আছিলো না। পরের জমিতে ঝুপড়ি ঘর তুলে পোলাপান আর বুড়ারে (স্বামী) নিয়া দিন পার করছি। অহন আমাগোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমির সঙ্গে আধাপাকা ঘর দিয়েছেন। ঘরের পাশে জমিতে সবজির আবাদ করতে পারতাছি। সবজি বেইচে সংসার খরচ চালায়ে মেয়েরে লেখাপড়া করাতে পারছি। অহন আর আমাগোর কোনও কষ্ট নাই।’

এভাবেই কথাগুলো বললেন ময়মনসিংহের সীমান্ত এলাকার ধোবাউড়ার দীঘলবাগ গ্রামের গারো জনগোষ্ঠীর নারী রেসিলা রংদী (৫৫)। 

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে রেসিলা দুই শতক জমি ও আধাপাকা টিনশেড ঘর পেয়েছেন। নিজের জায়গা না থাকায় তিন ছেলে ও তিন মেয়ে এবং স্বামী নবীন মানকিনকে নিয়ে পরের জমিতে ঝুপড়ি ঘর তুলে বসবাস করছিলেন। দিনমজুরি করে সংসার চলে রেসিলার।

দ্বিতীয় দফায় সাত ও তৃতীয় দফায় আরও সাত গারো জনগোষ্ঠীর পরিবারকে জমি ও ঘর দেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি ও ঘর পেয়ে স্বামী-সন্তান নিয়ে এখন শান্তিতে বসবাস করছেন তিনি। ঘরের পাশের জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করেছেন। দিনমজুরির পাশাপাশি ওই সবজি বিক্রি করে সংসার খরচ চালিয়ে ছোট মেয়ে সূর্যি রংদিকে লেখাপড়া করাচ্ছেন।

শুধু রেসিলা নন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপহার হিসেবে দ্বিতীয় দফায় সাত ও তৃতীয় দফায় আরও সাত গারো জনগোষ্ঠীর পরিবারকে জমি ও ঘর দেওয়া হয়েছে। ভূমিহীন গারো জনগোষ্ঠীর এসব মানুষ ঘর ও জমি উপহার পেয়ে অনেক খুশি। 

উপকারভোগী চম্পা মানকিন বলেন, ‘এখন নিজের জমি ও ঘরে স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকতে পারতাছি। আগে জমি ও ঘর ছিলো না, দিনমজুরি করে খুব কষ্টে আমাদের জীবনযাপন করতে হয়েছে। এখন আর ঘরের চিন্তা নাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি আমরা। তিনি আমাদের বসবাসের ঠাঁই দিয়েছেন।’

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ফিলিপস মানকিন বলেন, ‘গারো জনগোষ্ঠীর মানুষকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমি ও ঘর উপহার দেওয়ায় আমরা অনেক খুশি। সীমান্ত এলাকার গারো জনগোষ্ঠীর ভূমিহীন মানুষরা খুবই কষ্টে পরের জমিতে বাস করে আসছিল। উপহারের ঘর পেয়ে আমাদের কষ্ট দূর হয়েছে। এখনও যারা ভূমিহীন আছে তাদেরও ঘর দেওয়ার দাবি জানাই।’

ভূমিহীন গারো জনগোষ্ঠীর এসব মানুষ ঘর ও জমি উপহার পেয়ে অনেক খুশি

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ময়মনসিংহ জেলার ১৩ উপজেলায় এক হাজার ৯৫০ পরিবারকে দুই শতক জমি ও আধাপাকা টিনশেড ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) তৃতীয় দফায় আরও ৫৫৩ ভূমিহীন পরিবারকে জমি ও ঘর উপহার দেওয়া হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ভূমিহীন বাঙালিদের সঙ্গে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর গারো সম্প্রদায়ের মানুষকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি ও ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়হীন মানুষগুলো ঘর উপহার পেয়ে অনেক খুশি হয়েছেন। এসব ঘরের পাশে বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ, হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন তারা।’

/এএম/
সম্পর্কিত
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর এখন কোচিং সেন্টার
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে আগুনে একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু
অবৈধ ড্রেজিংয়ের ফলে ধসে পড়েছে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের ১০ ঘর
সর্বশেষ খবর
‘ঈদকে সামনে রেখে হাইওয়েতে চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না’
‘ঈদকে সামনে রেখে হাইওয়েতে চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না’
বিদেশে চিকিৎসা ব্যয়ে ছাড়, পাঠানো যাবে ১৫ হাজার ডলার
বিদেশে চিকিৎসা ব্যয়ে ছাড়, পাঠানো যাবে ১৫ হাজার ডলার
র‌্যাব বিলুপ্ত নাকি পুনর্গঠন, সিদ্ধান্তে কমিটি
র‌্যাব বিলুপ্ত নাকি পুনর্গঠন, সিদ্ধান্তে কমিটি
ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা ৪০ রোহিঙ্গা সীতাকুণ্ডে আটক
ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা ৪০ রোহিঙ্গা সীতাকুণ্ডে আটক
সর্বাধিক পঠিত
তালের শাঁস খেলে এত উপকার পাওয়া যায় জানতেন?
তালের শাঁস খেলে এত উপকার পাওয়া যায় জানতেন?
১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ, ছাত্রদল-যুবদলের ১০ নেতাকর্মী আটক
১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ, ছাত্রদল-যুবদলের ১০ নেতাকর্মী আটক
আসন্ন বাজেটে নতুন কী থাকছে
আসন্ন বাজেটে নতুন কী থাকছে
রংপুরের হাসপাতাল নেপাল ও ভুটানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
রংপুরের হাসপাতাল নেপাল ও ভুটানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
একাত্তরে গণহত্যায় সহযোগিতায় অভিযুক্তদের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যার আহ্বান এনসিপি’র
একাত্তরে গণহত্যায় সহযোগিতায় অভিযুক্তদের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যার আহ্বান এনসিপি’র