গাজীপুরের পাতারটেক এলাকায় পুলিশের জঙ্গি গ্রেফতার অভিযানের ঘটনায় নিহত তিনজনের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে পুলিশ। তবে এদের মধ্যে ঢাকার বংশালের ইব্রাহীম খলিল এবং সিরাজগঞ্জের ফরিদুল ইসলাম আকাশের নাম ঘটনার দিনই আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী জানালেও শনাক্ত হওয়া তৃতীয় ব্যক্তিটির নাম সাইফুল ইসলাম। নিহত এই জঙ্গি ছিলেন সিলেটের ছাতক উপজেলার বাসিন্দা।
মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টায় গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের কাছে এই তিন জঙ্গির নাম প্রকাশ করেন।
পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ জানান, পত্রিকায় জঙ্গিদের প্রকাশিত ছবি দেখে নিহতদের স্বজনরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসে তাদের শনাক্ত করার কথা জানান। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের ছাতকের সাইফুল ইসলাম ওরফে বাবুল ও ঢাকার বংশাল থানার মোগলটুলী এলাকার আজিম উদ্দিনের ছেলে ইব্রাহিমের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে সিরাজগঞ্জের ফরিদুল ইসলাম আকাশের পরিচয় মেলে।
নিহত জঙ্গি ইব্রাহিমের বাবা আজিম উদ্দিন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। ইব্রাহিম পড়াশোনা করেছেন ঢাকার যাত্রাবাড়ীর তামিরুল মিল্লাত মাদরাসায়। ইব্রাহীম চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। তিন মাস আগে বাসা থেকে নিখোঁজ হয় সে। এ ব্যাপারে তার বাবা ঢাকার বংশাল থানায় জিডিও করেছিলেন।
ইব্রাহিম জঙ্গি হওয়ায় তার বাবা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে মৌলবাদী গোষ্ঠীতে জড়িয়ে যাওয়ায় প্রাণ দিয়েছে আমার ছেলে। যারা আমার কোমলমতি সন্তানকে জঙ্গি বানিয়েছে তাদের শাস্তি চাই। আমি চাই আর কারো সন্তান যেন এ ধরনের জঙ্গি সংগঠনে না জড়ায়। এজন্য আমি সরকারের কাছে কঠোর পদক্ষেপ আশা করছি।’
এর আগে পাতারটেকের অভিযানের পর রবিবার রাতে সৌদি প্রবাসি সোলায়মানের স্ত্রী সালমা বেগম ও সোলায়মানের ভাই ওসমান গণিকে আটক করে পুলিশ।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, ওই দুইজন ছাড়াও সিলেটের ছাতকের সাইফুল ইসলাম নামে এক জঙ্গির স্বজনরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা সেখান থেকে গাজীপুরে আসছেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পাতারটেকের সোলেমানের বাড়িতে অভিযান চালায় সোয়াত ও পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। শরতের তুফান নামের ওই অভিযানে গোলাগুলিতে সাত জঙ্গি নিহত হয়।
আরও পড়ুন:
গাজীপুরে নিহত ৯ জঙ্গির লাশ ঢাকায় প্রেরণ
গাজীপুরে নিহত জঙ্গিদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি
/বিটি/টিএন/