নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মুক্তিপণের দাবিতে শিশু রমজান সিকদারকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও লাশ গুমের অভিযোগে প্রত্যেক আসামিকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায় দুটি এক সঙ্গে কার্যকর করা হবে। বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মিয়াজী শহীদুল আলম চৌধুরীর আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার ধামনা ধনকুশা গ্রামের মৃত নেয়ামত আলীর ছেলে হামিদুল হক, তার বোন আফরোজা ও ফুফাতো ভাই নকলা রামাইসা গ্রামের লাক্কর মিয়ার ছেলে মো.রিপন।
রমজান সিকদার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার মৃত ইসমাইল সিকদারের ছেলে। সে জালকুড়ি পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিল সে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার ইসমাঈল হোসেনের ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র রমজান সিকদারকে ভাড়াটিয়া হামিদুল হক, রিপন ও আফরোজা কৌশলে অপহরণ করে শেরপুর জেলার নখলা এলাকায় নিয়ে যায়। পরে তারা মোবাইল ফোনে রমজান সিকদারের বাবা ইসমাঈল হোসেনের কাছে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু মুক্তিপণের দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় আসামিরা রমজান সিকদারকে গলাটিপে হত্যার পর লাশ গুম করে ফেলে। এই ঘটানায় রমজান সিকদারের মা বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে ওই আসামিদের গ্রেফতার করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার চাপা ঝুড়ি সেতু এলাকা থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ ৩ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ডাক্তার, নার্স, ম্যাজিস্ট্রেটসহ মোট ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পিপি আব্দুর রহিম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন,‘সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিরা দোষি সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
তবে নিহত রমজান সিকদারের মা মর্জিনা বেগম রায়ে অসন্তোষ জানিয়ে বলেন, ‘আমার নিষ্পাপ ছেলেকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের ফাঁসি চেয়েছিলাম।’
/জেবি/
আরও পড়তে পারেন: ৯ মাসেও পুনর্বাসিত হননি গাইবান্ধার সাঁওতালরা