X
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
১৮ আষাঢ় ১৪৩২

রাঙামাটিতে বৃষ্টি মানেই আতঙ্ক

জিয়াউল হক, রাঙমাটি
১২ জুন ২০১৮, ১৭:৩৪আপডেট : ১৩ জুন ২০১৮, ০৯:২১

রাঙামাটিতে বৃষ্টি মানেই আতঙ্ক টানা বৃষ্টি ও পাহাড় ধসে রাঙামাটিতে গত বছরের ১৩ জুন মারা যায় শতাধিক মানুষ। এর রেশ কাটতে না কাটতেই আজ মঙ্গলবার (১২ জুন) নানিয়ারচর উপজেলায় কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসে এপর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত দুদিন ধরে টানা বৃষ্টির মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ধস, ফাটল ও গাছ উপড়ে পড়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে রাঙামাটিতে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বসবাসকারীদের সরে যেতে বললেও তাতে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে ধ্বসের ঘটনায় আতঙ্কিত হচ্ছে মানুষ। এই আতঙ্ক আরও বেড়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে।
গত রবিবার (১০ জুন) সকাল থেকে ভারী বর্ষণ আর ঝড়ো হাওয়ায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছ ভেঙে পড়ে। পরে প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তা সরিয়ে নেয়। সকাল থেকে ভারী বর্ষণ না থাকলেও লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি।
রাঙামাটিতে বৃষ্টি মানেই আতঙ্ক এদিকে, রবিবার দুপুরে শহরের উন্নয়ন বোর্ড এলাকায় দেয়াল ধসে পড়ে। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারী বর্ষণে চম্পকনগর, শিমুলতলি, ভেদভেদী ও কলেজ গেট এলাকায় বেশ কয়েক স্থানে পাহাড় ধসে পড়ার খবর পাওয়া যায়। অন্যদিকে, ঘাগড়ার শালবন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি রাস্তার ওপর পড়ে গেলে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ দুঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া, পাহাড়ি ঢলে ঘাগড়ায় লোকবসতিতে প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, পৌর এলাকায় ৬০৯টি পরিবার এবং জেলায় ৩ হাজার ৩৭টি পরিবার পাহাড়ের ঝুঁকিতে বসবাস করছে।
শহরের রূপনগর এলাকার বাসিন্দা আবুল মিয়া জানান, বৃষ্টি দেখলে ভয় করে, গত বছরের কথা মনে পড়ে যায়। বৃষ্টির কারণে সারারাত কেউ ঘুমাইনি।

জালাল মিয়া জানান, আবারও যেভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে এতে তাদের ভেতরে ভয় কাজ করছে। রাতে ভয়, আতঙ্কে ঘুম আসে না। তবুও জীবনের ভয় নিয়ে তাদের বসাবাস করতে হচ্ছে। নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে তারা কোথাও যেতে চান না।
দক্ষিণ মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা আজগর আলী। তার ছেলেও মারা গেছে গেল বছর পাহাড়চাপা পড়ে। কিন্তু এখনও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে পুরনো স্থানে ঘর করে থাকছেন তিনি।
রাঙামাটিতে বৃষ্টি মানেই আতঙ্ক পৌর কাউন্সিলর রবি মোহন চাকমা বলেন, ‘প্রশাসন তো ঝুঁকিপূর্ণ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য বলে আসছে, এখনও তাদের বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা কোথায় যাবে, কী করবে ? এজন্য অনেকেই তাদের পুরনো জায়গায় ঘরবাড়ি বেঁধে থাকছে। তবে জীবন বাঁচানোর জন্য তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয় নিতেই হবে। আমাদের আর যেন কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যু দেখতে না হয়। আমরা সে ব্যাপারে কাজ করছি।’
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বার বার মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন রূপনগরে ৩০টি তাবু টাঙিয়ে দিয়েছে। যারা ঝুঁকিতে বসবাস করছেন, তাদের দ্রুত সময়ে এসব তাবুতে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বসতকারীদের নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া, ওইসব এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আমরা মতবিনিময় সভা করেছি। ইতোমধ্যে পুরো জেলায় মোট ২১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গেলো বছর প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসে রাঙামাটিতেই চারজন সেনা সদস্যসহ ১২০ জন মারা যান। এতে আহত হন দুই শতাধিক মানুষ। ব্যাপক ক্ষতি হয় পুরো জেলায়। তিন মাস আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছিলেন প্রায় তিন হাজার মানুষ।

/এআর/ এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঋতুপর্ণা ইউ বিউটি!
ঋতুপর্ণা ইউ বিউটি!
গাজায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলো হামাস
গাজায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলো হামাস
৩৩ ডেপুটি জেলার বদলি
৩৩ ডেপুটি জেলার বদলি
বিদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ঋণ নীতিতে শিথিলতা
বিদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ঋণ নীতিতে শিথিলতা
সর্বাধিক পঠিত
অবশেষে রিজার্ভে আইএমএফের লক্ষ্য পূরণ হলো
অবশেষে রিজার্ভে আইএমএফের লক্ষ্য পূরণ হলো
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
ইলিশের দাম নির্ধারণের প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন
ইলিশের দাম নির্ধারণের প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন
ক্যাম্পাসে নতুন সভাপতির প্রবেশ ঠেকাতে দুদিন পাঠদান বন্ধ!
ঢাকা সিটি কলেজক্যাম্পাসে নতুন সভাপতির প্রবেশ ঠেকাতে দুদিন পাঠদান বন্ধ!
পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, তদন্তে কমিটি
পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, তদন্তে কমিটি