X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘গাঁজা খেয়ে ট্রাক চালাচ্ছিলেন তিনি’

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
২৫ জুন ২০১৮, ১৭:৫৯আপডেট : ২৫ জুন ২০১৮, ২০:১১

  নেশাগ্রস্ত চালকের কারণে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়

গাঁজা খেয়ে চালক ট্রাক চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকরা। নেশাগ্রস্ত চালকের কারণেই তাদের পাঁচ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উদযাপন করে খুশি মন নিয়ে আর কর্মস্থলে ফেরা হলো না তাদের, বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকরা।

সোমবার (২৫ জুন) ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার সাতুটিয়া এলাকায় ট্রাক (মাইমুনা এন্টারপ্রাইজ, ঢাকা-মেট্রো-ট- ১৮-৩৬৫৫) উল্টে খাদে পড়ে বাবা-ছেলেসহ পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরপরই ট্রাক ড্রাইভার পালিয়ে গেছেন।

দুর্ঘটনায় আহত রাসেল, শহিদুল, আবেদ আলী ও রফিকসহ একাধিক শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ট্রাক ড্রাইভার গাঁজা সেবনের পর নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ট্রাক চালাচ্ছিলেন। ড্রাইভারকে বাধা দিলে সে বলে ‘আমার বাবাও নেশা করে। নেশা না করলে গাড়ি চালাতে পারি না।’ ড্রাইভার নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ার কারণেই ট্রাকটি খাদে পড়ে যায়।”

ট্রাকের আহত যাত্রীরা জানান, তারা সবাই প্রাণ-আরএফএল  কোম্পানির শ্রমিক। ছুটি শেষে গাইবান্ধা থেকে দুটি ট্রাকে করে অন্তত ১২০ জন শ্রমিক সিলেটের উদ্দেশে রওনা দেন। ড্রাইভারের কারণেই তারা এ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।

কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ২৯ জন। দুর্ঘটনার পর পরই চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছেন। চালকের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’

নিহতদের স্বজনরা মৃতদেহ নেওয়ার জন্য মর্গের সামনে অপেক্ষা করছেন

নিহতরা হলেন, গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার বরদখালী গ্রামের আবুল শেখ (৫৫) ও তার ছেলে রাজ্জাক শেখ (২৫), একই উপজেলার পদমী শহর গ্রামের ইব্রাহিম বেপারির ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৬), একই জেলার ফুলছড়ি উপজেলার পশ্চিম ঘাটগাছি গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে সাইদুর রহমান (৩৪) ও মিরপুর গ্রামের আব্দুলের ছেলে আবুল কালাম (৩৫)। 

জানা যায়, নিহত আবুল শেখের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে রাজ্জাককে নিয়ে তিনি একই কোম্পানিতে কাজ করতেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে তারা কর্মস্থলে ফিরছিলেন। কিন্তু এই দুর্ঘটনার কারণে তাদের অভাবের সংসারে অন্ধকার নেমে এসেছে। নিহত রাজ্জাক শেখের সাত মাসের একটি মেয়ে রয়েছে। আবুল  ও রাজ্জাকই ছিলেন পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের মৃত্যুতে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। এখন সংসার কিভাবে চলবে এ চিন্তায় ভেঙে পড়েছে পরিবারটি।

নিহত আবুল শেখের ছোট ছেলে রমজান আলী বলেন,‘অভারের সংসারের কারণে তার বাবা ও ভাই চাকরিতে যোগ দিয়েছিল। অভাব আর দূর হলো না। একজন ট্রাক ড্রাইভারের জন্য আমাদের স্বপ্ন ভেঙে গেলো।’

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডা. তানভীর আহমেদ জানান, সকাল  ছয়টার দিকে অন্তত ৩৪ জন গুরুতর আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে পাঁচ জন মারা যান। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরিবারের লোকজন এসে নিয়ে গেছেন।

এলেঙ্গা হাইওয়ের পুলিশ সার্জেন্ট আজিজুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘নিহতদের পরিবার মরদেহ নিতে এসেছে। লাশ হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।’

 

 

 

/জেবি/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে আগ্রহী অস্ট্রিয়া
বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে আগ্রহী অস্ট্রিয়া
ভোটারবিহীন নির্বাচন চুন ছাড়া পানের মতো: ইসি রাশেদা
ভোটারবিহীন নির্বাচন চুন ছাড়া পানের মতো: ইসি রাশেদা
সিরি আ’য় এবারই প্রথম এক ম্যাচে সব নারী রেফারি
সিরি আ’য় এবারই প্রথম এক ম্যাচে সব নারী রেফারি
ফেরিঘাটে টেম্পুর ধাক্কায় কলেজশিক্ষার্থী নিহত
ফেরিঘাটে টেম্পুর ধাক্কায় কলেজশিক্ষার্থী নিহত
সর্বাধিক পঠিত
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ