গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বসতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম। স্থগিত হওয়া ৯টি কেন্দ্র বাদে নির্বাচনের বাকি ৪১৬ কেন্দ্রের ভোটের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নৌকা প্রতীকে ৪ লাখ ১০টি ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের ধানের শীষে পড়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬১১ ভোট। রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মণ্ডল এই ফল ঘোষণা করেন।
রিটার্নিং অফিসার বুধবার (২৭ জুন) সকালে সাংবাদিকদের বলেন, 'স্থগিত হওয়া ৯টি কেন্দ্রের ২৩ হাজার ভোটের সব ভোট ধানের শীষে পড়লেও হাসান সরকারের জয়ের সুযোগ নেই। কাজেই আপনারা বুঝতেই পারছেন বিজয়ী কে।' আজ বুধবার বেলা ১০টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণার কথা রয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৬ জুন) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। বিকাল ৪টার পর শুরু হয় ভোট গণনা। বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ ও অনিয়মের কারণে ৯টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন রিটার্নিং অফিসার।
জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার নগরীর কাসেমপুরে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাগবাড়ী হাক্কানিয়া ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়। এছাড়া ব্যালট পেপার সংকটের কারণে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয় বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সাত জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তারা হলেন– আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম (নৌকা), বিএনপি মো. হাসান উদ্দিন সরকার (ধানের শীষ), ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান (মিনার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন (হাতপাখা), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন (মোমবাতি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন (কাস্তে) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ (টেবিল ঘড়ি)। মূল লড়াই হয় জাহাঙ্গীর আলম ও হাসান সরকারের মধ্যে।
গাজীপুরে এবার মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন ও নারী ভোটার ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। এ সিটিতে এবার নতুন ভোটার এক লাখ ১১ হাজার। এছাড়া, শ্রমিক ভোটার দুই লাখের বেশি। সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডের ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩৭টিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও ৮৮টিকে সাধারণ চিহ্নিত করা হয়।
৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠিত। এসব ওয়ার্ডে কাউন্সিল পদে ৩৩৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ২৫৪ জন। সংরক্ষিত ১৯টি ওয়ার্ডে ৮৪ নারী কাউন্সিলর নির্বাচন করেছেন।
আরও পড়ুন-
আমরা পরিশ্রম করেছি তাই ভালো ফল পাচ্ছি: জাহাঙ্গীর
‘ভোটে সন্তুষ্ট কমিশন, ৯ কেন্দ্রের ভোট স্থগিত’