X
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
১৭ আষাঢ় ১৪৩২

যশোর মুক্ত দিবস আজ

যশোর প্রতিনিধি
০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:০৫আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:০৭

যশোর শহরে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্যাংক মহড়ার দৃশ্য আজ ৬ ডিসেম্বর, যশোর মুক্ত দিবস। মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে যশোর পাক হানাদার মুক্ত হয়েছিল। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে যশোর জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সকাল ১০ টায় মুন্সি মেহেরুল্লাহ ময়দান (টাউন হল মাঠ) থেকে একটি শোভাযাত্রা শহরের মণিহার এলাকায় অবস্থিত বিজয় স্তম্ভে গিয়ে শেষ হবে। সকাল সাড়ে ৮ টায় যশোর কালেক্টরেট চত্বর থেকে স্থানীয় একটি বেসরকারি সংগঠনের উদ্যোগে মিনি ম্যারাথন শহরের প্রায় আট কিলোমিটার প্রদক্ষিণ করবে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় স্তম্ভে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদনসহ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
যশোরের চৌগাছা উপজেলার সলুয়া বাজারে হানাদার বাহিনী তৈরি করে অগ্রবর্তী ঘাঁটি। এ সময় যশোর সেনানিবাসের তিন দিকেই মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী শক্ত ঘাঁটি গেড়ে বসে। প্রতিরোধ যুদ্ধের শেষ অভিযান চলে ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর। এ তিন দিন যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এ সময় মিত্রবাহিনীও সীমান্ত এলাকা থেকে যশোর সেনানিবাসসহ পাক আর্মিদের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা ও গোলা নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে পর্যুদস্ত পাকবাহিনী ৫ ডিসেম্বর থেকে পালাতে শুরু করে। এ দিন সকাল ও দুপুরে পাকিস্তানের নবম ডিভিশনের সঙ্গে ভারতীয় নবম পদাতিক ও চতুর্থ মাউন্টেন ডিভিশনের প্রচণ্ড লড়াই হয়। বিকালেই পাক সেনা অফিসাররা বুঝতে পারে- যশোর দুর্গ আর কোনোভাবেই রক্ষা করা সম্ভব নয়।
বেনাপোল অঞ্চলে দায়িত্বরত লে. কর্নেল শামসকে নওয়াপাড়ার দিকে দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন ব্রিগেডিয়ার হায়াত। আর নিজের ব্রিগেড নিয়ে রাতের আঁধারে যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে তিনি পালিয়ে যান খুলনার দিকে। পালানোর সময় ৫ ও ৬ ডিসেম্বর শহরতলীর রাজারহাটসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই হয়। ৬ ডিসেম্বর বিকালে মিত্রবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল বারাতের নেতৃত্বে মিত্র ও মুক্তিবাহিনী সেনানিবাস দখল করে।
যশোর সেনানিবাস এলাকায় হানাদারদের হাতে নিহত শহীদদের কঙ্কাল দাফনের প্রস্তুতি সংস্থাপন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ‘যশোর গেজেটিয়ার’-এ উল্লেখ করা হয়েছে, ‘৬ তারিখ সন্ধ্যা হতে না হতেই পাকবাহিনীর সবাই যশোর ক্যান্টনমেন্ট ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ৮ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক মেজর মঞ্জুর ও মিত্রবাহিনীর নবম ডিভিশনের কমান্ডার মেজর জেনারেল দলবীর সিং যশোরে প্রবেশ করেন। তখনও তারা জানতেন না যে, যশোর ক্যান্টনমেন্ট শূন্য। তারা বিস্মিত হন কোনও প্রতিরোধ না দেখে।’
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যশোর জেলার সাবেক কমান্ডার রাজেক আহমদ বলেন, ‘৬ ডিসেম্বরেই আমরা যশোর শহর থেকে শত্রু সেনাদের বিতাড়িত করি। কিন্তু সেদিন যশোর শহর ছিল জনশূন্য। ফলে পরদিন ৭ ডিসেম্বর বিজয় মিছিল বের হয়।’
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকে ৭ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হতো। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা ও ইতিহাসবিদদের দেওয়া তথ্যমতে, ২০১০ সাল থেকে ৬ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ৮ ডিসেম্বর যশোর শহরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় মুক্তিবাহিনী। ১০ ডিসেম্বর যশোরের জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ওয়ালিউল ইসলাম। ১১ ডিসেম্বর টাউন হল মাঠে জনসভা হয়। সেখানে মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অফিস-আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় ১২ ডিসেম্বর।

 

 

/ওআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (১ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (১ জুলাই, ২০২৫)
বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে
বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে
দুর্ঘটনায় ছয় মাসে প্রাণ হারিয়েছে ৪২২ শ্রমিক
দুর্ঘটনায় ছয় মাসে প্রাণ হারিয়েছে ৪২২ শ্রমিক
৪০ শতাংশ কৃষক পান না ন্যায্য মজুরি: জরিপ
৪০ শতাংশ কৃষক পান না ন্যায্য মজুরি: জরিপ
সর্বাধিক পঠিত
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস উপদেষ্টা আসিফ ও সাংবাদিক জুলকারনাইনের
ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস উপদেষ্টা আসিফ ও সাংবাদিক জুলকারনাইনের
‘ইউ আর পেইড বাই দ্য গভর্নমেন্ট’
এনবিআর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে অর্থ উপদেষ্টা          ‘ইউ আর পেইড বাই দ্য গভর্নমেন্ট’