১৯৭১ সালের এই দিন পিরোজপুর পাকহানাদারমুক্ত হয়। এই দিন ঘরে ঘরে উড়ছিল লাল সবুজের বিজয় পতাকা। পিরোজপুরের ইতিহাসে এ দিনটি বিশেষ স্মরণীয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুর ছিল মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে। পিরোজপুর ছিল সুন্দরবনের সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন।
১৯৭১ সালের ৪ মে পাকিস্তানি বাহিনী পিরোজপুরে ঢুকে পড়ে। শহরের ঢোকার পথেই পাকিস্তানি বাহিনী হুলারহাট নৌবন্দরের পাশে মাছিমপুর ও কৃষ্ণনগর গ্রামে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এরপর ৮ মাস ধরে স্থানীয় শান্তি কমিটির নেতা ও রাজাকারদের সহায়তায় বিভিন্ন এলাকার সংখ্যালঘু ও স্বাধীনতার পক্ষের লোকজনের বাড়িতে আগুন দেওয়াসহ চালায় হত্যাযজ্ঞ। পিরোজপুরকে হানাদারমুক্ত করতে সুন্দরবনের সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ৭ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে পিরোজপুরের পাড়েরহাট বন্দর দিয়ে শহরে প্রবেশ করে। মুক্তিবাহিনীর আসার খবর পেয়ে পাকিস্তানি বাহিনী শহরের পূর্বদিকের কঁচানদী দিয়ে বরিশালের দিকে পালিয়ে যায়। এর আগে স্বরূপকাঠির কুড়িয়ানা এলাকার পেয়ারা বাগানে মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্গে পাকবাহিনী আক্রমণ করে। ওই সময় যুদ্ধে হাতে বহু পাকসেনা নিহত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে পাকিস্তানি বিাহিনী পরাজিত হয়।
পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমান্ডার (অর্থ) শহিদুল আলম মন্টু জানান, ৮ ডিসেম্বর পাকসেনারা পিরোজপুর ছেড়ে চলে গেলে পিরোজপুর মুক্ত হয়। ঘরে ঘরে ওড়ে বিজয় পতাকা।
পিরোজপুর মুক্ত দিবস উদযাপন পরিষদের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ বছর দিবসটি পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহীদ ভাগীরথী চত্বরে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ। আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে শহরের স্বাধীনতা চত্বরে নির্মিত স্বাধীনতা মঞ্চের উদ্বোধন, গণসংগীত পরিবেশন ও আলোচনা সভা। স্বাধীনতা মঞ্চের উদ্বোধন, আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি।