সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত বৃহস্পতিবার (২১ মে) রাতে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা এক নারী রোগীকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হলে ওই দিন মধ্যরাতে তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন শুক্রবার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে। কিন্তু বিপত্তিটা বাধে তখন, যখন জানা যায় ওই নারী করোনা উপসর্গ নিয়ে গাজীপুর থেকে এসে মারা গিয়েছেন। এই তথ্য গোপন করার মাশুল দিতে হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে।
করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ওই নারীর গাজীপুর ফেরতের তথ্য জানাজানির পর, শুক্রবার (২২ মে) সকাল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সব ধরনের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রেখে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিন রাতে দায়িত্বে থাকা ‘সি’গ্রুপের চিকিৎসক-নার্সদের হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।
জানা যায়, পাঁচ দিন আগে জ্বর ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে শাহজাদপুরের পোতাজিয়া গ্রামের বাড়ি ফেরেন ওই নারী। সেখানে দুই পোশাক শ্রমিক ছেলের বাড়িতে থাকাবস্থায় তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বাড়ি ফেরার পরও সেই উপসর্গ থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান স্বজনরা। রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান। পরে তার স্বজনরা কৌশলে ও গোপনে নিজ গ্রামের কবরস্থানে লাশ দাফন করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম খান জানান, ওই নারীর গাজীপুর থেকে আসার বিষয়টি গোপন রেখে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর পরপরই তিনি মারা যান। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় তাকে দাফন করা হয়। শুক্রবার (২২ মে) সকালে বিষয়টি জানতে পেরে হাসপাতাল লকডাউন করে রোগী ও বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করা হয়। চিকিৎসকসহ দায়িত্বপ্রাপ্তদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। দাফন ও জানাজায় অংশ নেওয়া সবাইকে নিজ নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার অনুরোধসহ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সংস্পর্শে আসা সবার নমুনা পরীক্ষার প্রক্রিয়া চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ‘হাসপাতাল, নিহতের বাড়ি ও আশপাশের এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।’