এলাকায় ত্রাণ বিতরণের নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ও যুবলীগ নেতা বজলুর রশিদের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় যুবলীগ নেতার বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানায় চেয়ারম্যানসহ ২৩ জনের নামে মামলা হয়েছে। ওসি মোজাহারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসের সমর্থক। আর বজলুর রশিদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গুরুদাসপুর পৌরমেয়র শাহনেওয়াজ মোল্লার সমর্থক। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত ছিল। এরই জেরে মঙ্গলবার (২৬ মে) উভয়গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মোবাইল ফোন না ধরলেও তার ভাতিজা মিল্টন জানান, সরকারি ত্রাণ তালিকার বাইরে চেয়ারম্য্যানের কাছে অতিরিক্ত ত্রাণ দাবি করেন বজলু। অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কুৎসা রটাতে থাকেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে চেয়ারম্যান বিল্লাবাড়ি বাজারে গেলে বজলু তার লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়ে লাঞ্চিত করেন। এরই জেরে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
তবে বজলুর রশিদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বাবা ইসমাইল সরদার ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর। এছাড়া তিনি উপজেলা যুবলীগের নেতা হিসেবে এলাকাবাসীর প্রতি দায়বদ্ধতার কারণেই ৩০০ মানুষকে নিজ অর্থায়নে ত্রাণ দেন। এটা জানার পর চেয়ারম্যান তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে গালিগালাজ ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। এছাড়া ঘোষণা করে বজলুরের অনুসারী কাউকে যেন তার পক্ষে ত্রাণ কেউ না দেয়।
মঙ্গলবার সকালে চেয়ারম্যান ঝাউপাড়া বিল্লাবাড়ি বাজারে এলে তাকে ওই বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে চেয়ারম্যানের সহযোগী মতিন তার বাবা ইসমাইল ও বড়ভাই ফজলুকে মারতে উদ্যত হয়। এসময় তার অনুসারীরা এগিয়ে একে চেয়ারম্যানরা চলে যায়। পরে চেয়ারম্যানের অনুসারীরা তার বাড়িতে ভাঙচুর করে। এসময় ৭ রাউন্ড গুলিবর্ষণ ছাড়াও তার নিজের, বাবার, বড়ভাই ও প্রতিবেশী বাড়িঘর ভাংচুর করে। এ ঘটনায় তাদের নগদ সাড়ে আটলাখ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই প্রাণ শঙ্কায় তিনি এলাকা ছাড়া বলেও দাবি করেন বজলু।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মোজাহারুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ইসমাইল সরদার বাদী হয়ে চেয়ারম্যানসহ ২৩ জনের নামে ও অজ্ঞাত কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। চেয়ারম্যানের এক অনুসারীকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।