X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভুলে ফেলে যাওয়া ক্যাপের সূত্র ধরেই খুনি ধরলো ডিবি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
০৩ জুন ২০২০, ১০:৪৪আপডেট : ০৩ জুন ২০২০, ১১:৫১

রক্ত মাখা সেই ক্যাপ

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড উপজেলার দখলপুর গ্রামের বেলেমাঠে কৃষক নূর ইসলাম ওরফে বুড়োকে কুপিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পান বরজে ভুলে ফেলে যাওয়া হত্যাকারীদের একজনের মাথার ক্যাপের সূত্র ধরে ক্লুলেস এই হত্যার মূল ঘটনা উদঘাটন করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুন) ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, বরিশখালী গ্রামের মতিচুর রহমান, জিনারুল ইসলাম, শামীম হোসেন। এদের মধ্যে মতিচুর জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক। জিনারুল ও শামীম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

জানা গেছে, গত বছরের ৫ মে বিকালে দখলপুর গ্রামের বেলেমাঠ থেকে নূর ইসলামের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিন নিহতের ভাই আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে হরিণাকুণ্ড থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও মূল ঘটনা জানতে তদন্তে নামে থানা পুলিশ। একজনকে গ্রেফতার করা হলেও মূল ঘটনা আড়ালেই থেকে যায়। পরে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালত মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করে। ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের ওসি আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে মামলার তদন্ত শুরু করেন পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম।

ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান জানান, হত্যার ২-৩ দিন আগে কৃষক নূর ইসলাম তার পান বরজের জমির আইল কাটছিল। পাশের জমির মালিক মতিচুর রহমান জমির আইল কাটতে বাধা দেয়। এ নিয়ে দু’জনের বাক-বিতণ্ডা হয়। হত্যার দু’দিন আগে সন্ধ্যায় মতিচুর বরিশখালী বাজারের একটি চায়ের দোকানে আসামিদের নিয়ে নূরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন ৫ মে নূরের পান বরজে যায় হত্যাকারীরা। কিলিং মিশনে অংশ নেয় ৬ জন। প্রথমে নূরকে চড়-থাপ্পড় মারলে সে পড়ে যায়। সেখান থেকে দৌড়ে পাশের পান বরজে গেলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর আসামিরা যার যার মতো চলে যায়। তবে রক্তমাখা ক্যাপ পরে জিনারুল তার নিজের পান বরজে যায়। সেখানে তার ক্যাপটি ভুলে ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে সেটি উদ্ধার করে।

গ্রেফতার হওয়া জিনারুল (বাঁয়ে) ও শামীম

মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম ক্যাপের মালিক খোঁজা শুরু করেন। স্থানীয় ও গ্রামবাসী ক্যাপটি জিনারুলের বলে জানায়। এরপর জিনারুলকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে। হত্যার পর থেকে জিনারুল সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় আত্মগোপনে ছিল। মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। নির্মাণ শ্রমিক, হকার সেজে সেখানে অভিযান শুরু করে ডিবি। পরে ঢাকা থেকে জিনারুলকে ৩০ মে  গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ডিবি। ঝিনাইদহে আনার পর পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান, ডিবি ওসি আনোয়ার হোসেন ও পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলামের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করে। ৩১ মে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে। পরে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ৩১ মে শামীম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। শামীম সোমবার (১ জুন) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, এখন পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। দ্রুতই তাদের গ্রেফতার করা হবে।

/এসটি/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কোনও রান না দিয়ে ৭ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে ইন্দোনেশিয়ার বোলারের বিশ্ব রেকর্ড
কোনও রান না দিয়ে ৭ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে ইন্দোনেশিয়ার বোলারের বিশ্ব রেকর্ড
রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
ঢামেক হাসপাতালে কারাবন্দীর মৃত্যু
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত