X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

চার জেলায় করোনায় ১৬ জনের মৃত্যু, চিকিৎসা না পাওয়ায় ডাক্তার লাঞ্ছিত

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
০৫ জুলাই ২০২০, ১০:২২আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২০, ১১:০৬

খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল করোনায় আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও গোপালগঞ্জে ১৬ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে খুলনায় ৫ , কুমিল্লায় ৫, বগুড়ায় ৫ এবং গোপালগঞ্জে একজন। এদের কেউ কেউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবার কেউ কেউ বাড়িতে মারা গেছেন। এদিকে, চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগে টুঙ্গিপাড়ায় এক ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করেছেন রোগীর স্বজনরা।

খুলনা

খুলনায় শুক্রবার (৩ জুলাই) রাত থেকে শনিবার (৪ জুলাই) রাত পর্যন্ত করোনার উপসর্গ নিয়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি রয়েছেন। ৫ জনের মধ্যে চার জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা সাসপেক্ট  ওয়ার্ডে এবং একজনের মৃত্যু হয় রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

তারা হলেন, বয়রা এলাকার খাদিজা বেগম (৫৫), খালিশপুর কাষ্টমস হাউজের কায়কোবাদ (৫৮), সোনাডাঙ্গার শেখপাড়ার মোশাররফ হোসেন (৭৫), আড়ংঘাটা থানার গাইকুড়ের কামরুল ইসলাম (৭০) এবং রূপসার স্কুল শিক্ষক আলম মামুন (৩৫)। সবারই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।  

খুমেক হাসপাতালের করোনা সাসপেক্ট ওয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, খাদিজা বেগম শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন থাকার মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। 

শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টায় শাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হন কায়কোবাদ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাত ১২টা ১০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে মোশাররফ হোসেন জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে মারা যান। কামরুল ইসলাম শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তিনি ভর্তি হন।

এদিকে, সরকারি নবপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আল মামুন (৩৫) করোনার উপসর্গ নিয়ে শনিবার রাতে রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হলে রাত পৌনে ৯টার দিকে মারা যায়। 



কুমিল্লা
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে করোনা উপসর্গে আরও পাঁচ জন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় কুমেকের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও পাঁচ জন। তাদের মধ্যে একজন নারী আর চারজন পুরুষ।
মারা যাওয়াদের মধ্যে আইসিইউতে ছিলেন, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের আবদুল হালিম (৬৮) এবং চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার টিপু সুলতান (৪৬)। আইসোলেশন ওয়ার্ডে মারা যান, বুড়িচং উপজেলার নাজিরবাজার এলাকার নূরজাহান (৮০), ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার গোপালনগর এলাকার মোশাররফ হোসাইন (৫৩) এবং নুরুজ্জামান (৮৮)।    
প্রসঙ্গত, মেডিক্যালের করোনা ইউনিটে পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১২১ জন। এদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ৬২ জন ও করোনা উপসর্গ ৫৯ জন। 

শজিমেক হাসপাতাল

বগুড়া

বগুড়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজন এবং উপসর্গ নিয়ে চার জন মারা গেছেন। তারা সবাই শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

শজিমেকের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে রাসেল কাউসার টুটুল (৪২) নামে এক ব্যবসায়ী মারা যান। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে ২৪ জুন টুটুলের করোনা পজিটিভ আসে। এরপর তাকে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে তাকে শজিমেক হাসপাতাল আইসোলেশনে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তিনি মারা যান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহরের নামাজগঞ্জ আঞ্জুমান-ই-গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে, শজিমেক হাসপাতাল আইসোলেশনে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত করোনার উপসর্গ নিয়ে চার জন মারা গেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের মানিক (৪৫) করোনা উপসর্গ নিয়ে শুক্রবার বেলা ২টার দিকে হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান। নওগাঁর সাপাহারের গ্রাম পুলিশ হারুন অর রশিদ (৫৩) করোনা উপসর্গ নিয়ে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হন। সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান। বগুড়া সদরের তেলিপুকুর
ইসলামপুকুর গ্রামের মোমেনা খাতুন (৭০) করোনার উপসর্গ নিয়ে ২ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তিনি মারা যান। এছাড়া বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার মাস্টারপাড়ার আবু তাহের (৬৫) করোনার উপসর্গ নিয়ে শনিবার দুপুরে হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি হন। বিকাল ৪টার দিকে তিনি মারা গেছেন।

গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা না পেয়ে করোনার উপসর্গ নিয়ে কাজী আলমগীর নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অপূর্ব বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করেন রোগীর স্বজনরা। শনিবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ইয়ার আলী মুন্সী বলেন, শনিবার সকালে করোনা উপসর্গ নিয়ে ওই রোগী আমাদের কাছে আসলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালে ভর্তি করার কার্যক্রম শুরু করি। এরই মধ্যে তিনি মারা যান। রোগীর আত্মীয় গাজী তরিকুল ও তার সঙ্গে আসা ৩/৪ জন লোক কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অপূর্ব বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করে।

গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। দোষীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে চিকিৎসকদের পক্ষে থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।



 

/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কোয়ালিটি বিচারে দেশের শীর্ষ স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি
কোয়ালিটি বিচারে দেশের শীর্ষ স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি
জোর করে ব্যাংকের একীভূতকরণ ঠিক হবে না: ড. ফরাসউদ্দিন
জোর করে ব্যাংকের একীভূতকরণ ঠিক হবে না: ড. ফরাসউদ্দিন
পাঁচ বছরে শুরু, ৮৬-তে থামলো ডুয়ান এডির গিটার
পাঁচ বছরে শুরু, ৮৬-তে থামলো ডুয়ান এডির গিটার
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন, দেখে দুদক বললো ‘নিম্নমানের কাজ’
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন, দেখে দুদক বললো ‘নিম্নমানের কাজ’
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
সজলের মুগ্ধতা অপির চোখে, জন্মদিনে
সজলের মুগ্ধতা অপির চোখে, জন্মদিনে