X
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
১৭ আষাঢ় ১৪৩২

পান চাষে করোনার থাবা

দুলাল আবদুল্লাহ, রাজশাহী
২৪ জুলাই ২০২০, ১৩:১৪আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২০, ১৩:১৪

পান চাষ এবার পানের উৎপাদন ভালো ছিল। এরপরও লোকসানের মুখে রাজশাহীর পানচাষিরা। করোনাভাইরাসের কারণে বেচাকেনা সীমিত হওয়ায় পান বিক্রি করে আসল খরচ ওঠানো যাবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় তারা। 

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিধফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলায় পান চাষের সঙ্গে জড়িত আছেন ৬৯ হাজার ২২৮ জন কৃষক। এবার চার হাজার ৩১১ হেক্টর জমিতে পান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৮ হাজার ৯৭৬ মেট্রিক টন। গড়ে ৪০ টাকা বিড়া ধরে এক টন পানের দাম দাঁড়ায় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। রাজশাহীতে বছরে গড়ে ১১০০ কোটি টাকার পান বেচাকেনা হয়। পান চাষ

জানা গেছে, রাজশাহীর মোহনপুর, দুর্গাপুর ও বাগমারা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পান উৎপাদন হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের পর পানের দাম কমে গেছে। ঘন ঘন বৃষ্টিপাতের কারণে উৎপাদন ভালো হলেও বর্ষা মৌসুমে ৩২ বিড়া ( ৬৪টি পানে ১ বিড়া) পান বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০০ টাকায়। অথচ গত বছর বর্ষা মৌসুমে ২০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। পান চাষ

মোহনপুর উপজেলার আমরাইল গ্রামের চাষি মিলন জানান, এক বিঘা জমিতে একটি পানবরজে বছরে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়। বাজার ভালো হলে খরচসহ চার থেকে পাঁচ লাখ টাকায় পান বিক্রি করা যায়। কিন্তু এবার করোনার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। পানের বরজ

মোহনপুর উপজেলার হারিদাগাছি গ্রামের আব্দুস সালাম জানান, অন্য বছরের তুলনায় এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি। তাই পানের উৎপাদনও দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু ভাইরাসের কারণে এবছর বিদেশে পান যায়নি। এই কারণে পানের দাম খুবই কম। এক বিড়া পান গতবছর এই সময়ে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা দরে। সেই পান এখন বিক্রি হচ্ছে বিড়াপ্রতি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা দরে। আর ছোট যে পান ৫০ টাকা বিড়া দরে বিক্রি হয়েছে, সে পান বিক্রি হচ্ছে বিড়া প্রতি দুই টাকা দরে। পান বিক্রি করে লেবারের খরচটাই উঠছে না। পানের বরজ

রাজশাহীর মোহনপুর ছাড়াও বাগমারা ও দুর্গাপুর উপজেলায় পান চাষ করা হয়। তবে মোহনপুরে বেশি চাষ হয়। মোহনপুরের হলিদাগাছি গ্রামের আরেক কৃষক আবুল কালাম জানান, ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত পান ভাঙতে খাওয়া দাওয়াসহ একজন শ্রমিককে খরচ দিতে হয় ৫০০ টাকা। এখন অবস্থা এমন পান ভেঙে বিক্রি করে তাতে শ্রমিকের পয়সা হয় না।

দুর্গাপুর উপজেলার পানচাষি মতিউর রহমান জানান, এক বিঘা জমিতে বছরে পান উৎপাদনে রক্ষণাবেক্ষণ ও শ্রমিকের খরচ পড়ে একলাখ ৩০ হাজার টাকার মতো। সেখানে পান বিক্রি করলে সর্বনিম্ন তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। পান চাষ

বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর এলাকার পানচাষি শেখ আসলাম জানান, করোনার কারণে দেশের অন্য এলাকা থেকে পাইকাররা এলাকায় কম আসছেন। আবার করোনার কারণে ছোট দোকানগুলো সীমিত আকারে খোলা থাকছে। এতে করে পানের বেচাকেনা কম হচ্ছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মো. শামসুল হক জানান, ‘ছোট ছোট ভাসমান পানের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। বড় অনেক দোকানও বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারণে পানের দাম এখন কিছুটা কম। এছাড়া রাজশাহীর পান মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানেও যেত। এখন তো বিমান চলাচল বন্ধ, তাই যেতে পারছে না। পান সারাবছরই পাওয়া যায়। তবে করোনাকালীন দুর্যোগের কারণে অনেকেই পান খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। এতে করে পানচাষিদের ওপর একটু হলেও প্রভাব পড়েছে। তবে দুর্যোগ কাটিয়ে উঠলে আবার সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

 

/এফএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (১ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (১ জুলাই, ২০২৫)
বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে
বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে
দুর্ঘটনায় ছয় মাসে প্রাণ হারিয়েছে ৪২২ শ্রমিক
দুর্ঘটনায় ছয় মাসে প্রাণ হারিয়েছে ৪২২ শ্রমিক
৪০ শতাংশ কৃষক পান না ন্যায্য মজুরি: জরিপ
৪০ শতাংশ কৃষক পান না ন্যায্য মজুরি: জরিপ
সর্বাধিক পঠিত
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস উপদেষ্টা আসিফ ও সাংবাদিক জুলকারনাইনের
ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস উপদেষ্টা আসিফ ও সাংবাদিক জুলকারনাইনের
‘ইউ আর পেইড বাই দ্য গভর্নমেন্ট’
এনবিআর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে অর্থ উপদেষ্টা          ‘ইউ আর পেইড বাই দ্য গভর্নমেন্ট’