পরপর তিন দফা বন্যায় নওগাঁর রাণীনগরে মরিচের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে মরিচের গাছগুলো ধীরে ধীরে মরে যাওয়ায় ফলন বিপর্যয়ে উপজেলার মরিচ চাষিরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। গত মৌসুমে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মরিচ বাজারজাত করা হলেও এ মৌসুমে বৃষ্টি আর দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় মরিচ ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছিল। বাঁশগাইয়া, মল্লিকা, বিন্দু, হট মাস্টার, সুরক্ষাসহ বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের মরিচ আবাদ করা হয়েছে। বন্যায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। গত সপ্তাহে রাণীনগরের বিভিন্ন হাটবাজারে কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও ঈদুল আজহার পর বাজার দর কিছুটা কমের দিকে। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় ৫টি ইউনিয়নে চাষিরা পরীক্ষামূলক ভাবে ধান চাষের পাশাপাশি মরিচ চাষ শুরু করেছে। গত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে মরিচ চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলার দূর্গাপুর মিনা পাড়া গ্রামের মরিচ চাষি আজাহার আলী বলেন, ‘আমি ধান চাষের পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে মরিচ চাষ করছি। এ বছর অতি বৃষ্টির কারণে মরিচের গাছগুলো লালবর্ণ হয়ে মরে গেছে। ফলন বিপর্যয়ে কারণে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।’
গোনা গ্রামের কৃষক কবির উদ্দিন বলেন, ‘এবারের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় আমার ১০ কাঠা জমির মরিচ ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েকবার মরিচ তোলার পর বন্যার পানি জমিতে ঢুকে সব মরিচ গাছ মরে গেছে। এবার মরিচ চাষ করে আমি ব্যাপক লোকসানে পড়েছি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষকদের মাটির বৈচিত্র্য ও উর্বরতা রক্ষায় চাষিদেরকে আমরা পরিবর্তনশীল এবং লাভজনক ফসল চাষে পরামর্শ দিচ্ছি। যার ফলে চাষিরা ধানের পাশাপাশি মরিচ চাষ করছে। লাগাতার বৃষ্টি ও বন্যার কারণে মরিচ চাষিদের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। কোনও সহায়তা এলেই তা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।