চাঁদপুর মেঘনা নদীতে ইলিশ শিকারি জেলেদের নৌকায় হামলা চালিয়ে ডাকাতি-লুটপাট হচ্ছে গত প্রায় এক মাস ধরে। জেলেরা মাছ শিকার করে ফেরার পথে মাছ, নৌকার ইঞ্জিনসহ সঙ্গে থাকা সব কিছু লুটে নিচ্ছে চক্রটি।
এ ঘটনা ঘটছে জেলার সীমান্তবর্তী হাইমচর উপজেলার তেলীরমোড় এলাকা থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর থানা এবং পশ্চিমে বরিশাল জেলার হিজলা থানার নৌ-সীমানায়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন অসহায় জেলেরা।
রবিবার (২৩ আগস্ট) বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ চাঁদপুর জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ জেলেরা একত্রিত হয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের দফতরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, আমরাসহ হাইমচর উপজেলার শত শত জেলে এই এলাকা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। মৎস্য আহরণ করে গন্তব্যে পৌঁছানোর সময় জলদস্যুদের ২০-২৫ টি গ্রুপ মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট অধিক গতি সম্পন্ন ট্রলারে করে সাধারণ জেলেদের ওপর আক্রমণ করে থাকে। তারা জেলেদের কাছ থেকে, মাছ, টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোন এমনকি জাল-নৌকাও নিয়ে যায়।
এই জলদস্যুদের সম্পর্কে এখানকার দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট ট্রলারগুলো মালিকরা অবগত আছেন। তাদের সঙ্গে কারও কারও যোগসাজশও রয়েছে। এদের কারও কারও আবার উপজেলার চরভৈরবী এলাকার বাবুরচরসহ বিভিন্ন চরে মাছের আড়ৎ রয়েছে। তারা নিজেদের আড়তে মাছ বিক্রি করতে জেলেদের চাপ প্রয়োগ করে। জেলেরা যদি তাদের কাছে মাছ বিক্রি না করে তবে জলদস্যুদের দিয়ে তারা ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। এসব ঘটনা আগে কম ঘটলো এখন প্রতিদিনই ঘটছে।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ডাকাতির বিষয়ে চাঁদপুর হাইমচরের কোস্টগার্ড এবং নীলকমল ফাঁড়ির পুলিশকে অবহিত করা হলেও তারা কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে সাধারণ জেলেরা চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করে এই স্মারকলিপি দিয়েছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক মানিক দেওয়ান, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর সরদার, হাইমচর উপজেলা প্রতিনিধি মোক্তার আহমেদ দর্জি, জেলে ও নৌকা মালিক বাদশা মিয়া, তাফাজ্জল হোসেন, খোকন বিশ্বাস, সোবাহান হাওলাদার, বাবুল পেদা প্রমুখ।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক দেওয়ান বলেন, জেলেরা ইলিশসহ মাছ ধরে ফেরার পথে একটি দল এসে জিম্মি করে মাছ, ইঞ্জিন, লাইট, মোবাইল, সৌর বিদ্যুতের প্যানেলসহ সব কিছু লুট করে নিয়ে যায়। গত প্রায় এক মাস ধরে নিয়মিত হাইমচরের তেলিরমোড় থেকে শুরু করে দক্ষিণে চাঁদপুরের শেষ প্রান্ত রায়পুর-বরিশালের সীমান্তবর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটছে। এর সঙ্গে জড়িত রায়পুরের খাসেরহাট এবং বরিশালের হিজলা এলাকার কিছু লোক।
তিনি বলেন, আমরা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। আশাকরি শিগগিরই এর সমাধান পাবো।