বাংলাদেশের মানচিত্রে রংপুর বিভাগই সবচেয়ে উঁচু এলাকা। দিনাজপুর, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট সবচেয়ে উঁচু হলেও বাকি জেলাগুলোর গড় উচ্চতাও দেশের অন্য জেলাগুলো থেকে বেশি। বর্ষা পেরিয়ে হঠাৎই তুমুল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এই বিভাগের জনজীবন। টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে বিভাগের আটটি জেলার মানুষই ঘরবন্দি ছিল দিনের বেশিরভাগ সময়। তবে গত শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত এই বৃষ্টির মাত্রা ছিল ভয়াবহ বেশি। বিশেষ করে রংপুর জেলায় এসময়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে গত ১০০ বছরের মধে সর্বোচ্চ। শহরের ৬০টি পাড়া-মহল্লা ডুবে গেছে হাঁটু থেকে কোমর পানির নিচে। ঠাকুরগাঁওয়ের আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী এই বৃষ্টি ছিল গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। নীলফামারী ও গাইবান্ধাতেও হয়েছে একদিনের হিসেবে বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত। বৃষ্টি হয়েছে কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট ও দিনাজপুরেও। তবে পানি বন্দিদশা ভয়াবহ ছিল রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁওতেই।
(ওপরে) রংপুর শহরের একটি রাস্তা, নিচে রংপুর শহরর একটি ঘরের ভেতর থেকে সেঁচে বের করা হচ্ছে ঢুকে পড়া বৃষ্টির পানি। যে শহরে এক রাতে ৪৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় সেখানে ঘরের ভেতরে পানি ঢোকার ঘটনায় আতঙ্ক তৈরি হয় এলাকাজুড়ে।
রংপুরের একটি মহল্লায় এমনই পানি ঢুকেছে যে খাটের পায়া ডুবে গেছে, শুধু বিছানা ডোবা বাকি। বাধ্য হয় বাড়ি-ঘর ফেলে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন ঘরের বাসিন্দারা।
গাইবান্ধায় শহর না ডুবলেও দিনভর বৃষ্টি ভোগান্তিতে ফেলে জেলাবাসীকে। (নিচের ছবি)
নীলফামারীর বাবু পাড়া মহল্লায় জমে গেছে বৃষ্টির পানি।
নীলফামারীর সৈয়দপুরের নিচু এলাকাগুলোতে পানি জমে ঢুকে পড়েছে ঘর-বাড়িতে। অবস্থা এমন যে পানি নামার আগে গরু-বাছুর রাখার শুকনো জায়গা মেলানো দায় হয়ে পড়ে। ভীষণ ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ কৃষকরা।
এত বৃষ্টি যে ডুবে গেছে টিউবওয়েলের পাইপের অংশ।
ঘর-বাড়িতে পানি ঢোকায় দুর্বিষহ সময় পার করেন সৈয়দপুরের এলাকাবাসী।
পানি ঢুকে গেছে নীলফামারী ফায়ার সার্ভিস অফিসের নিচেও।
ঠাকুরগাঁওয়ে বৃষ্টি হয়েছে ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। শনিবার জেলা সদরে ৮৬ মিলিমিটার। পানিবন্দি হয়ে গেছে পুরো এলাকা। (নিচের ছবি)
কারও কোমর, কারও গলা ডুবে গেছে পানিতে। ঠাকুরগাঁওয়ে এমন বৃষ্টিতে ভীষণ কষ্টে সাধারণ মানুষ।
প্রবল বর্ষণে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে। এখানে মাটিচাপা পড়ে মারা যান একই পরিবারের ৪ জন।
প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে ভারত থেকে নামছে পাহাড়ি ঢল। ভয়াবহ পরিস্থিতি আবারও শুরু হয়েছে ধরলায়। নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ভাঙন।