কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি প্রণোদনার ২০ বস্তা (৪০০ কেজি) গম বীজ আটক করেছে স্থানীয়রা। উপজেলা কৃষি অফিসের গুদাম থেকে ভ্যানে করে বীজ নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা এসব বীজ আটক করা হয়। রবিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকালে এ ঘটনা ঘটে। রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান এ তথ্য জানিয়েছেন।
বীজ আটককারীদের একজন শেখ শাহীন আলম জানান, রবিবার বিকাল ৪টার দিকে উপজেলা কৃষি অফিসের স্টোর থেকে ভ্যানে করে ২০ বস্তা গম বীজ নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি ভ্যানটি আটক করেন। ভ্যানের সঙ্গে কোনও কৃষক ছিল না। ভ্যানচালক আব্দুল খালেক জানান, যে এসব বীজ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের। পরে ভ্যান চালকের ফোন পেয়ে জিয়াউর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন।
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর এসে আমাকে পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে ভ্যান ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিলে আমি তা প্রত্যাখ্যান করি এবং ইউএনও স্যারকে ফোনে বিষয়টি অবহিত করি। পরে ইউএনও স্যারের নির্দেশে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসে বীজগুলো জব্দ করে নিয়ে যান।’
তিনি আরও বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর অনিয়মের মাধ্যমে কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত এসব বীজ স্টোর থেকে বের করে তার ভাই রবিউল ইসলাম বাবুর দোকানে নিয়ে যাচ্ছিল। সে তার ব্লকের (চুলিয়ারপার ব্লক) কৃষকদের নামে বরাদ্দ নিয়ে এসব বীজ বাজারে বিক্রির চেষ্টা করছিল।
অভিযোগ অস্বীকার করে জিয়াউর রহমান বলেন, ‘ভ্যানচালকের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলেও বীজগুলো পাচারের বিষয়ে আমি জানি না। আটককারীকে আমি কোনও টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও দেইনি।’ তবে বীজগুলো উপজেলা কৃষি অফিসের স্টোর থেকে বের করা হয়েছিল এবং তার ভাই বীজ ব্যবসা করেন বলে স্বীকার করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন জানান, আটককৃত বীজগুলো জব্দ করে উপজেলা প্রশাসনে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও আল ইমরান বলেন, কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত বীজ কীভাবে বাইরে এলো তা তদন্ত করে বের করা হবে। এর সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
প্রসঙ্গত, এবছর রৌমারী উপজেলায় মোট ৮ হাজার ৩৫০ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জন্য পুনর্বাসন প্রণোদনা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।