X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাজাকারের স্ত্রী পেলেন সরকারি ঘর, মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভ

বগুড়া প্রতিনিধি
২৩ অক্টোবর ২০২০, ২১:৫১আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২০, ২৩:০১

রাজাকারের স্ত্রী পেলেন সরকারি ঘর, মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভ বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার গোবিন্দপুর ইউনিয়নে খিহালী চকপাড়া গ্রামের চিহ্নিত রাজাকার খোরশেদ আলী ফকির খুদুর স্ত্রী সরকারি দুর্যোগ সহনীয় ঘর পেয়েছেন। এতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আবদুল সালাম নামে এক মুক্তিযোদ্ধা এই ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) এ ব্যাপারে ওই প্রকল্পের সভাপতি গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর বেলাল হোসেন দাবি করেন, প্রশাসনের লোকজন ও চেয়ারম্যান রাজাকারের স্ত্রী মলিনা বেওয়াকে সরকারি বাড়ি দিতে বাধ্য করেছেন।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জাকির হোসেন জানান, স্বামীর আগের অবস্থা না জেনে দরিদ্র হিসেবে তাকে বাড়ি দেওয়া হয়েছে। খুদু রাজাকারের বাড়িতে কোনও পুরুষ সদস্য না থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গোবিন্দপুর ইউনিয়নের খিহালী চকপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম অভিযোগ করে জানান, গ্রামে অনেক হতদরিদ্র আছে। অথচ রাজাকার খুদুর স্ত্রীকে সরকারি বাড়ি দেওয়া হয়েছে। এতে তিনিসহ মুক্তিযুদ্ধে পক্ষের লোকজন দুঃখ পেয়েছেন এবং তারা ক্ষুব্ধ। তিনি এ ব্যাপারে তদন্তসাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, রাজাকার খুদুর পরিবার স্বাবলম্বী। তারা সম্পদ ও সম্পত্তির তথ্য গোপন করে বড় তদবিরের মাধ্যমে সরকারি বাড়ি পেয়েছেন। এর নেপথ্যে সরকারি দলের দায়িত্বশীল নেতাকর্মীরাও রয়েছেন। বর্তমানে ওই বাড়ি আড়াল করতেই ইট দিয়ে প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ প্রকল্পের সভাপতি গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বেলাল হোসেন জানান, মুসলিম লীগের খুদু চিহ্নিত রাজাকার ছিলেন। যুদ্ধের শেষে মুক্তিযোদ্ধারা তাকে হত্যা করে। রাজাকারের স্ত্রী মলিনা বেওয়াকে সরকারি বাড়ি দেওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়। তিনি প্রায় এক মাস এতে স্বাক্ষর দেননি। পরবর্তীতে প্রশাসনের লোকজন ও তার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম হেলাল মনোয়ারের চাপে তিনি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছেন।

গোবিন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনোয়ার জানান, তার জন্ম স্বাধীনতার পর। তাই খুদু রাজাকার ছিলেন কিনা তা তার জানা নেই। এছাড়া এই তালিকা তিনি করেননি; করতে কাউকে চাপও দেননি।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফুল আরেফিন জানান, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই উপজেলায় ১৮টি দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি দেওয়া হয়। মলিনা বেওয়ার স্বামী ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাবিরোধী ছিল কিনা তা জানা নেই। তার পরিবার দরিদ্র হিসেবে আবেদন করায় বাড়ি দেওয়া হয়।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী মণ্ডল জানান, রাজাকারের পরিবার সরকারি বাড়ি পেতে পারে না। এ ব্যাপারে তিনি কোনও অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জাকির হোসেন জানান, মলিনা বেওয়ার স্বামীর ব্যাপারে তার কিছুই জানা নেই। বর্তমান অবস্থা দেখে তাকে বাড়ি দেওয়া হয়েছে।

/এনএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ