প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় পাবনার সুজানগরের সাতবাড়িয়ায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে বিচার দাবি করেছেন ওই ছাত্রীর সহপাঠীরা। বুধবার (১৮ মে) বিকালে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সাতবাড়িয়া কলেজের সামনে ওই ছাত্রী হামলার শিকার হন।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন বাদী হয়ে এক কিশোরকে আসামি করে সুজানগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত কিশোর সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ফকিরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
এদিকে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সকাল ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের গেটে বিক্ষোভ শেষে মানববন্ধন করেন। কর্মসূচি থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা নিরাপদে স্কুলে যাতায়াত করতে চাই। স্কুলে যাতায়াতের সময় বখাটেদের উপদ্রব ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত স্কুলছাত্রী বলেন, ফকিরপুর গ্রামের এক কিশোর দীর্ঘদিন ধরে আমাকে উত্ত্যক্ত করছিল। প্রায়ই স্কুলে যাতায়াতের সময় প্রেমের প্রস্তাব দিতো। আমি রাজি না হওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়। বুধবার অন্য ছাত্রীদের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে সাতবাড়িয়া কলেজের সামনে আমার পথরোধ করে ওই কিশোর। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রাস্তা থেকে টেনে পাশে নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এ সময় অন্য ছাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে ওই কিশোর পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আমাকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
সাতবাড়িয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাল উদ্দিন বলেন, এমন বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় ওইদিন রাতেই আমি বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আমার বিদ্যালয়ে প্রায় ৯শ’র মতো শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা কাজ করছে। আমরা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।
সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ফারজানা আক্তার বলেন, আঘাত গুরুতর হলেও এখন ওই শিক্ষার্থী আশঙ্কামুক্ত। আপাতত হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চলছে।
সুজানগর থানার ওসি আব্দুল হান্নান বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই ওই কিশোরকে গ্রেফতারে অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা তৎপর আছি।