X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

চতুর্থ শ্রেণিতে এক শিক্ষার্থী, পঞ্চম শ্রেণিতে কেউ নেই

নওগাঁ প্রতিনিধি
০৬ জুন ২০২২, ২১:৩২আপডেট : ০৭ জুন ২০২২, ১৮:০২

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ৮২ নম্বর ছাতারদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা মাত্র ১৪ জন। এর মধ্যে চতুর্থ শ্রেণিতে একজন থাকলেও পঞ্চম শ্রেণিতে কোনও শিক্ষার্থী নেই। অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে কালীগ্রাম ইউনিয়নের ছাতারদিঘী গ্রামে অবস্থিত ৮২ নম্বর ছাতারদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৮৮ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। একসময় অনেক শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে পড়ালেখার মান খারাপ হওয়ায়, লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় ঝরে যেতে থাকে শিক্ষার্থীরা। করোনার প্রভাবে দুই বছর বন্ধ থাকা ছাড়াও পরিচালনা কমিটি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব গড়ায় বিদ্যালয় পর্যন্ত। ভেঙে পড়ে পড়ালেখার মান। ফলে শিক্ষার্থীরা পাশের বিদ্যালয়ে চলে যায়।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দেওয়া তথ্যমতে, করোনাভাইরাসে বিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার আগে ২৫ জন শিক্ষার্থী ছিল। খোলার পর শিক্ষার্থীরা অন্য বিদ্যালয়ে চলে যাওয়ায় বর্তমানে প্রথম শ্রেণিতে পাঁচ, দ্বিতীয় শ্রেণিতে চার, তৃতীয় শ্রেণিতে চার এবং চতুর্থ শ্রেণিতে একজন শিক্ষার্থী রয়েছে। পঞ্চম শ্রেণিতে থাকা তিন শিক্ষার্থীর সবাই অন্য বিদ্যালয়ে চলে যাওয়ায় বর্তমানে ওই শ্রেণি শিক্ষার্থীশূন্য। ১৪ শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন তিন জন।

শিক্ষার্থীর অভিভাবক জহুরুল হক বলেন, ‘আমরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাই ভালো শিক্ষা অর্জনের জন্য। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা হয় না। যে কারণে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছি।’

অপর অভিভাবক লিটন হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়ে পড়ালেখার কোনও সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নেন না। আমরা বারবার এ নিয়ে অভিযোগ করেছি। এমনকি সভাপতিকে বলেও কোনও ফল পাইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সভাপতির সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ জন্য সভাপতির কথায় প্রাধান্য দেন না প্রধান শিক্ষক। বাধ্য হয়ে দুই ছেলেকে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছি।’

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আনোয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, ‘শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়েও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আনতে পারেননি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আফজাল হোসেনের সঙ্গে আমার পারিবারিক দ্বন্দ্ব রয়েছে।’

সভাপতি আফজাল হোসেন দাবি করেন, ‘শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না এবং ভালোভাবে পাঠদান করেন না। যে কারণে অভিভাবকরা সন্তানদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানিয়েও কোন ফল হয়নি।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আমি বিষয়গুলো শুনেছি। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফেরাতে প্রয়োজনে অভিভাবক সমাবেশ করা হবে। অন্য প্রক্রিয়া থাকলে, তা অনুসরণ করা হবে। তবে কেন শিক্ষার্থীরা অন্য বিদ্যালয়ে চলে গেছে, সে বিষয়গুলো ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, ‘পরিদর্শন করে ওই বিদ্যালয়ে সুষ্ঠু, সুন্দর ও মনোরম পাঠদানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’

/এফআর/
সম্পর্কিত
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি বন্ধ
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনাল আজ
সর্বশেষ খবর
হাজারীবাগে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
হাজারীবাগে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
ব্রাজিলিয়ান মিগেলের গোলে কষ্টে জিতলো কিংস
ব্রাজিলিয়ান মিগেলের গোলে কষ্টে জিতলো কিংস
তীব্র গরমে সুপার লিগে দুই দিন করে বিরতি
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগতীব্র গরমে সুপার লিগে দুই দিন করে বিরতি
ড্রিমলাইনারের কারিগরি বিষয়ে বোয়িংয়ের সঙ্গে কথা বলতে বিমানকে মন্ত্রীর নির্দেশ
ড্রিমলাইনারের কারিগরি বিষয়ে বোয়িংয়ের সঙ্গে কথা বলতে বিমানকে মন্ত্রীর নির্দেশ
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া