বগুড়ার শিবগঞ্জে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনের কার্যক্রমে অংশ নেওয়ায় তিন ইউনিয়নের বিএনপির ছয় নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সোমবার শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওহাব স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। মঙ্গলবার (২১ মে) বিকালে বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন আবদুল ওহাব।
অব্যাহতি পাওয়া নেতারা হলেন শিবগঞ্জ উপজেলার মাঝিহট্ট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আকবর আলী তালুকদার, ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রানা সোনার, আটমূল ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি তৌহিদুল ইসলাম ঠান্ডা, শিবগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এবিএম কামরুজ্জামান শাকি, শিবগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য জাহিদ মন্ডল এবং সদস্য আব্দুল মান্নান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৯ মে তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এক তরফা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে। বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করেছে। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে ছয় নেতার বিরুদ্ধে। তাই দলীয় গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করায় শিবগঞ্জ উপজেলার তিন ইউনিয়ন বিএনপির ওই ছয় নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম বংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা কাউকে দল থেকে বহিষ্কার করতে পারি না। তাই শুধু ছয় নেতাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। কেন্দ্র তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।’
তবে দুপুরে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিবগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এবিএম কামরুজ্জামান শাকি। নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাকি বলেন, ‘গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শিবগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান সাঈদ প্রকাশ্যে ব্যাচ লাগিয়ে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। অথচ তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হচ্ছে। নির্বাচনে নৌকা, লাঙ্গল বা
অন্য কোনও দলের প্রতীক নেই। এরপরও মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যা জাতীয়তাবাদী দলের সংবিধান পরিপন্থি।’
বিএনপির দায়িত্বশীল এক নেতা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন জানিয়ে শাকি বলেন, ‘আমি যদি চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজার রহমানের আনারস মার্কার ভোট করতাম, তাহলে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতো না। দলীয় পদ থেকে কাউকে অব্যাহতি দিতে হলে আগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হয়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।’
দলীয় পদ থেকে অব্যাহতিকে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমিও করেছি।’
এ ব্যাপারে আবদুল ওহাব বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দল ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু ওসব নেতাকর্মী নির্বাচনি কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন। তাই দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’