বগুড়ার সোনাতলার রানীরপাড়ায় ছয় কোটির অধিক টাকা ব্যয়ে ৩০০ মিটার বাঙালি নদীর ডান তীর সংরক্ষণের কাজ শেষ হয়েছে। এতে নদীতীরে বসবাসকারীদের মাঝে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে দক্ষিণ বয়ড়া থেকে ঠাকুরপাড়া বুড়ামেলা পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার সুখদহ নদীর বাম তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, স্বাধীনতার পর গত ৫৩ বছরে বাঙালি নদীর অব্যাহত ভাঙনে অনেক জনপদ মানচিত্র থেকে মিশে গেছে। সে সঙ্গে অনেক বসতভিটা, জায়গা-জমি, গাছপালা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাঙালি নদীর তীরবর্তী সাত শতাধিক মানুষ বাড়িঘর অন্যত্র স্থানান্তর করেছেন। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রানীরপাড়ায় প্রায় ৩০০ মিটার বাঙালি নদীর ডান তীর সংরক্ষণের জন্য প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ছয় কোটি ৩৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান গত বছরের ২ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে কাজটির উদ্বোধন করেন।
বাঙালি-করতোয়া-ফুলজোর-হুরাসাগর নদী সিস্টেম ড্রেজিং, পুনঃখনন ও তীর সংরক্ষণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কাজটি বাস্তবায়ন করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
উপজেলার হলিদাবগা গ্রামের রোস্তম আলী মণ্ডল, বাবর আলী মেম্বার, ডাক্তার আজহার আলী মানিক, ডাক্তার জান্নাতুল আলম দুখু, শিল্পী বেগম, জরিনা বেগম প্রমুখ বলেন, ‘স্বাধীনতার পর ৩ থেকে ৪ বার বাঙালি নদীর অব্যাহত ভাঙনে বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এমনকি বাপ-দাদার কবরটাও নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বন্যা এলেই নদীভাঙন আতঙ্কে রাতে দুচোখে ঘুম আসতো না। কখন যেন শয়ন ঘরটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এভাবে বছরের পর বছর বন্যার সময় নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে। বর্তমানে নদীটির রানীরপাড়া, নামাজখালী, সাতবেকী, মোনারপটল, নিশ্চিন্তপুর, হলিদাবগা ও সোনাকানিয়ায় তীর সংরক্ষণের কাজ শেষ হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আমরা এখন নির্ভয়ে রাত কাটাতে পারছি।’
এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান বলেন, ‘এলাকাবাসী আমাকে যে কারণে নির্বাচিত করেছেন আমি আমৃত্যু তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে চাই।’
ঠিকাদার এ কে এম বজলুর রহমান টিপু বলেন, ‘ইতোমধ্যেই তীর সংরক্ষণের মূল কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু কিছু ব্লক পানিতে ডাম্পিং করতে হবে। ডাম্পিংয়ের কাজটি শেষ হলেই নদীভাঙনের আশঙ্কা শতভাগ নিরসন হবে।’