বগুড়ার শাজাহানপুরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে আহত রেজাউল ইসলাম রনি (৩৬) ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুরে মারা গেছেন। গত ১১ নভেম্বর রাতে উপজেলার বেজোড়া হিন্দুপাড়ায় এ হামলা হয়েছিল। তার মৃত্যুর খবর প্রচার হলে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে ওই এলাকার জড়িত সন্দেহে চার জনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
শাজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ করিম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।’
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নিহত রেজাউল ইসলাম রনি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চকলোকমান দক্ষিণপাড়ার মৃত আবদুল হামিদ আলীর ছেলে। তার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী বেজোড়া হিন্দুপাড়ার বাদশা মিয়ার ছেলে আকরাম হোসেন ও রানা মিয়া, শহিদুল ইসলামের ছেলে মারফি, মৃত সজল দাসের ছেলে সজীব দাস, শুকুর আলীর ছেলে সুজন আলী, আবদুর রশিদের ছেলে সুমন, বাবলু দাসের ছেলে মঙ্গল দাস, মৃত সুরেশের ছেলে সীমান্ত, আবদুল করিমের ছেলে শাকিল ও কিনু মণ্ডলের ছেলে সজিবের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।
রেজাউল ইসলাম রনি গত ১১ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে তার বন্ধু জমি কেনাবেচা ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের সঙ্গে মোটরসাইকেলে উপজেলার বেজোড়া হিন্দুপাড়ায় জমির বায়না করতে যান। পথিমধ্যে হিন্দুপাড়া বটতলায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাদের পথরোধ করে। তারা রনি ও নজরুলকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে বটতলায় নিয়ে যায়। বাগবিতণ্ডর একপর্যায়ে তাদের মারপিট এবং রনির মাথা ও পিঠে ছুরিকঘাত করে পালিয়ে যায়। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে রনিকে উদ্ধার করেন। তাকে প্রথমে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ হামলার ঘটনায় রনির মা শাজাহানপুর থানায় অভিযোগ দেন। হাসপাতালে রনির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার বেলা ১২টার দিকে তিনি (রনি) মারা যান।
এদিকে রনির মৃত্যুর খবর প্রচার হলে মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্ত হামলাকারীদের মধ্যে রানা, সজীব দাস, সুমন, সজিবের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা বলছেন, রনিকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকায় বিক্ষুব্ধরা তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, হত্যা মামলা দুর্বল করতে হত্যায় জড়িতরা নিজেদের বাড়িতে নিজেরাই আগুন দিয়েছে।
শাজাহানপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাসুদ করিম জানান, কেউ বলছে উত্তেজিত জনগণ হত্যায় জড়িতদের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বলছে, অভিযুক্তরা নিজেরাই নিজেদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত চলছে। হত্যা ও হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।