X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

১৫ কোটি টাকা পরিশোধ করেনি ট্যানারি, পুঁজি সংকটে দিনাজপুরের চামড়া ব্যবসায়ীরা

বিপুল সরকার সানি, দিনাজপুর
১৬ আগস্ট ২০১৮, ০১:১৫আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০১৮, ০৯:০৪

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই কোরবানীর ঈদ। কিন্তু পুঁজির অভাবে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের দুই শতাধিক চামড়া ব্যবসায়ী। তাদের দাবি, গত ৩ বছর ধরে জমতে থাকা তাদের পাওনা ১৫ কোটি টাকা পরিশোধ করছে না ট্যানারি মালিকরা। আর এতে করে পুঁজির সংকট তৈরি হয়েছে। ব্যাংক থেকে চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ গ্রহণেরও সুযোগ নেই জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এবারে চামড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। প্রতীকী ছবি

দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির তথ্য মতে, দেশের উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহত্তম চামড়ার বাজার দিনাজপুরের রামনগর। এ বাজারে শুধুমাত্র কোরবানীর সময়েই দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার ৩৫ থেকে ৪০ হাজার পিস গরু ও ২৫ থেকে ৩০ হাজার পিস ছাগলের চামড়া বেচাকেনা হয়। সারা বছরে এ সংখ্যা যাথাক্রমে ৭০-৭৫ হাজার পিস ও ৪০-৫০ হাজার পিস। জেলার প্রায় ২ শতাধিক ব্যবসায়ী কাঁচা চামড়া ক্রয় করে এ বাজারেই প্রক্রিয়াজাতকরণ করেন নাটোর ও ঢাকার ট্যানারি মালিকদের সরবরাহ করার জন্য।

চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের বলেছেন, দেশের চামড়া ব্যবসার যে দুর্গতি তার প্রধান কারণ আর্ন্তজাতিকভাবে চামড়া বিক্রি না হওয়া। তাছাড়া শুল্ক ও লবণসহ প্রয়োজনীয় রাসায়নিকের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়াতেও এই ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না। ফলে ব্যবসায়ীরা নতুন করে পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারছেন না। এই পরিস্থিতি ব্যবসায়ীদের জন্য শোচনীয়। ট্যানারি মালিকরা পাওনা টাকা পরিশোধ করলে চামড়ার ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, নয় তো অনেকের মতো বর্তমানে টিকে থাকা ব্যবসায়ীরাও পেশা বদলাতে বাধ্য হবেন।

সমিতির সভাপতি জুলফিকার আলী স্বপনের ভাষ্য, ৩ বছর ধরে পাওনা জমেছে ১৫ কোটি টাকা। এতে করে অনেকেই চামড়ার ব্যবসা বাদ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এবারে সঠিক হারে চামড়ার মূল্য নির্ধারিত হয়নি দাবি করে তিনি বলেছেন, বিদেশে চমড়া রফতানি করা হয় নগদ অর্থে। অথচ ট্যানারি মালিকরা দিনাজপুরের ব্যবসায়ীদের বকেয়া ১৫ কোটি টাকা পরিশোধ করছেন না।  ঋণসহ সরকারি সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পরও ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধে গাফিলাতি করছেন। চামড়া শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ট্যানারি মালিক ও সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা যে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করবেন তারও কোনও সুযোগ নেই বলে জানান জুলফিকার আলী স্বপন।

চামড়া ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, এবারে ঢাকার বাইরে লবনযুক্ত চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা প্রতি বর্গফুট। এই মুল্যহারে চামড়া দিতে হলে তাদেরকে চামড়া ক্রয় করতে হবে ২৫ থেকে ৩০ টাকা প্রতি বর্গফুট হিসেবে। কিন্তু এই মূল্যহারে চামড়া পাওয়া সম্ভব নয়। বেশি দামে চামড়া কিনলে লোকসানে পড়তে হবে। তাই চামড়ার বাজার দর নিয়ে শঙ্কা বিরাজ করছে তাদের মধ্যে।

দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আখতার আজীজ জানান, ৩ বছরের পাওনা টাকা পরিশোধ করছেন না ট্যানারি মালিকরা, এতে ধস নেমেছে চামড়া ব্যবসায়। বিষয়টি নিয়ে ট্যানারি মালিক ও সরকারের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। এবারে চামড়ার যে মূল্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে তা গত বছরের তুলনায় প্রতি বর্গফুটে  ২০ টাকা কম। এই মূল্যে চামড়া কেনা কঠিন হয়ে যাবে। যদি চামড়ার মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা না হয় তাহলে ব্যবসায়ীরা সমস্যাতেই থাকবেন। চামড়া ব্যবসায়ীরা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত উপনীত হয়েছেন দাবি করে তিনি আরও বলেছেন, চামড়া শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এখনই জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

/এএমএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’
বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
জোড়া আঘাতে হায়দরাবাদকে গুটিয়ে চেন্নাইয়ের জয় রাঙালেন মোস্তাফিজ
জোড়া আঘাতে হায়দরাবাদকে গুটিয়ে চেন্নাইয়ের জয় রাঙালেন মোস্তাফিজ
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ