X
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
১৭ আষাঢ় ১৪৩২

যমুনার বুকে কৃষকের হাসি!

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
১২ এপ্রিল ২০২১, ০২:৪৩আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২১, ০২:৪৩

বাতাসে দোল খাচ্ছে সবুজ ধানের পাতা। উঠোন ভরা সোনালী ধানের যে স্বপ্নে বুনে এসেছিলেন, তা যেন সত্যি হয়ে হাতছানি দিচ্ছে কৃষকের জীর্ণ কুটিরে। যমুনায় জেগে ওঠা চরে জমিতে ধান চাষ করেছেন কৃষকেরা। মৃদু হাওয়া দোল খাওয়া সবুজ পাতাগুলোর মত তাদের হৃদয়ও যেন দুলে দুলে ওঠছিল। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা, খোকশাবাড়ি ও ছোনগাছা ইউনিয়নের যমুনার চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

চরাঞ্চলের মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- একসময় মাঠভরা ফসল, গোলাভরা ধান আর যমুনার রূপালি মাছ ছিল চরের মানুষের ঘরে ঘরে। গত দুই যুগ ধরে নদীভাঙন আর প্রলয়ঙ্করী বন্যায় একে একে সবকিছুই যমুনার গর্ভে চলে যায়। ধীরে ধীরে সহায়-সম্পত্তি সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে কৃষকরা। সব হারিয়ে শহররক্ষা বাঁধের ওপর পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করতেন চরবাসী।

যমুনার বুকে কৃষকের হাসি!

২০১৭ সালের শেষের দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জেলা সদর রক্ষায় যমুনার বুক চিরে চারটি ক্রসবার বাঁধ নির্মাণ করায় সদর উপজেলার কাওয়াকোলা, ছোনগাছা, খোকশাবাড়ি ও কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জেগে ওঠেছে বিশাল চর। এসব অঞ্চলের সর্বস্ব হারানো কৃষকদের মনে বইছে আনন্দের সুবাতাস। নতুন করে ফিরে পাওয়া বাপ-দাদার ভিটেমাটিতে বসবাস ও চাষাবাদ করছেন তারা। ধান, গম, আখ, ভুট্টা, চীনাবাদাম, কালাইসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষ হচ্ছে এখানে। এছাড়াও নিজ বাড়িতে গরু, ছাগল, হাস-মুরগি পালন করে বাড়তি আয়ের পথ খুঁজে নিয়েছেন কৃষাণীরা।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা চরের কৃষক বায়েজিদ বলেন, বাবার প্রায় ১৫ বিঘা আবাদি জমি এক সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছিল। নদী ভাঙনরোধে যমুনার বুক চিরে ক্রসবার বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ফলে জেগে ওঠেছে আমাদের বাড়িসহ প্রায় পাঁচ বিঘা আবাদি জমি। এই জমিতে আমি ধান আবাদ করেছি। গাঢ় সবুজ পাতাগুলো দেখে মনে হচ্ছে ফলনও খুব ভাল হবে।

যমুনার বুকে কৃষকের হাসি!

কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম বলেন, চরাঞ্চলের জমি জেগে ওঠায় হতদরিদ্র চরবাসীর ভাগ্য বদলে গেছে। এখন আর চরের মানুষের অভাব-অনটন নেই। পল্লী বিদ্যুতের মাধ্যমে ধীরে ধীরে আধুনিকতার ছোঁয়াও পৌঁছে যাচ্ছে চরাঞ্চলে।

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. হাবিবুর হক বলেন, সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলে প্রায় ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ হয়। ক্রসবার বাঁধ নির্মাণ হওয়ার পর আরও চার হাজার হেক্টর জমি নতুন করে চাষযোগ্য হয়েছে। এসব জমিতে ধান গমের পাশাপাশি ব্যাপকহারে ভুট্টা ও চীনাবাদাম আবাদ করছেন কৃষকরা।

 

/এনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জুলাই ব্যর্থ হয়েছে এ কথা বলার সময় এখনও আসেনি: আব্দুল্লাহ তাহের
জুলাই ব্যর্থ হয়েছে এ কথা বলার সময় এখনও আসেনি: আব্দুল্লাহ তাহের
ছেলের অনার্স-মাস্টার্স শেষ, এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন মা
ছেলের অনার্স-মাস্টার্স শেষ, এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন মা
৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ টন সার কেনার সিদ্ধান্ত
৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ টন সার কেনার সিদ্ধান্ত
তেলেঙ্গানায় ওষুধ কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৩৬
তেলেঙ্গানায় ওষুধ কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৩৬
সর্বাধিক পঠিত
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা মুখোমুখি
প্রশাসনে থামছে না আন্দোলনঅন্তর্বর্তী সরকার ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা মুখোমুখি
আরও ১১ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
আরও ১১ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন অর্থবছরের বাজেট
আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন অর্থবছরের বাজেট