X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও চালু হচ্ছে ‘বর্ডার হাট’

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
১৬ নভেম্বর ২০২২, ১৩:০২আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২২, ১৩:০৬

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে বন্ধ হওয়ার আড়াই বছরেরও বেশি সময় পর বালিয়ামারী-কালাইয়েরচর সীমান্তে ‌‘বাংলাদেশ-ভারত বর্ডার হাট’ চালু হতে যাচ্ছে। আগামী ৩০ নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এই হাট আবারও চালু করা হবে। 

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির জেলা প্রশাসক পর্যায়ের বৈঠকে হাট চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে ২০২০ সালের ৫ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় বর্ডার হাটের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। এরপর বন্যার কারণে হাটের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় উভয় দেশের সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে হাট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সীমান্ত হাট ব্যবস্থানা কমিটির জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সীমান্ত হাট এলাকায় বৈঠকে মিলিত হন। এ সময় উভয় দেশের প্রতিনিধিরা দ্রুততম সময়ে সীমান্ত হাট চালুর বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছান। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম। ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দক্ষিণ-পশ্চিম গারোহিল আমপাতি জেলার ডেপুটি কমিশনার ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জি-খারমাও ফ্লাং। এছাড়া দুই দেশের বর্ডার হাট ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সীমান্ত হাট ব্যবস্থানা কমিটির জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ মঙ্গলবার সীমান্ত হাট এলাকায় বৈঠকে মিলিত হন

বর্ডার হাটের বাংলাদেশের তালিকাভুক্ত ব্যবসায়ী ফরজ আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলাম। বন্যায় হাটের কিছু স্থানে এবং যাতায়াতের রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলো মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন হাট চালুর সিদ্ধান্তে আমরা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি। কারণ এখানে ব্যবসা করে দুই টাকা হলেও আয় করতে পারি। তবে পণ্য এবং ক্রেতার সংখ্যা আরও বাড়ালে উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা লাভবান হবেন।’

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এবং বন্যায় সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় হাটের কিছু অংশ সংস্কার করতে হচ্ছে। এজন্য দুই সপ্তাহ সময় প্রয়োজন। উভয় দেশের সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব প্রস্তুতি শেষ করে আগামী ৩০ নভেম্বব অথবা ১ ডিসেম্বর হাটটি আবারও চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ’

ব্যবসায়ীদের দাবির বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তারা কিছু চাহিদার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু ভারতের সাথে চুক্তি অনুযায়ী যেসব পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত রয়েছে আপাতত তাই চালু থাকবে। ব্যবসায়ীরা তাদের দাবির বিষয়গুলো জানালে আমরা সেন্ট্রাল গভমেন্টকে তা জানিয়ে দেবো।’

বর্ডার হাট সম্পর্কে যা জানা গেছে

কুড়িগ্রামের রজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারী এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারোহিল আমপাতি জেলার মহেন্দ্রগঞ্জ থানার কালাইচর সীমান্তে ২০১১ সালের ২৩ জুলাই বর্ডার হাট চালু করা হয়। ওই সীমান্তের আন্তর্জাতিক পিলার ১০৭২ এর পাশে নো ম্যান্স ল্যান্ডে উভয় দেশের ৭৫ মিটার করে ৪ বিঘা জমিতে হাটের অবস্থান। বাংলাদেশ অংশে বালিয়ামারী সীমান্তের ব্যাপারীপাড়া এলাকার জিঞ্জিরাম নদীর পূর্ব প্রান্ত এবং ভারতীয় অংশে রয়েছে মহেন্দ্রগঞ্জ থানার কালাইর চর সীমান্ত। হাটে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশ ও ভারত অংশে পৃথক পৃথক সড়ক রয়েছে।

পণ্য কেনা-বেচা

বর্ডার হাটে ইচ্ছা করলেই সবকিছু কেনা-বেচার সুযোগ নেই। উভয় দেশের বর্ডার হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য ৬৯টি পণ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সীমান্ত কৃষি ও হালকা শিল্পপণ্য। বর্ডার হাটে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত শাকসবজি, ফলমূল, মসলা, গৃহস্থালি পণ্য, বনজ সম্পদ, কুটিরশিল্প, কৃষিজাত যন্ত্রপাতি, তৈরি পোশাক, প্রসাধন সামগ্রী ইত্যাদি বেচাকেনা করা যাবে। এসব পণ্যের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য ৩৭টি পণ্য বিক্রয়ের অনুমোদন রয়েছে। আগে শুধু বুধবার হাটের দিন থাকলেও পরে প্রতি সোম ও বুধবার দুই দিন হাট বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ক্রেতা-বিক্রেতা

হাটে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য উভয় দেশের তালিকাভুক্ত ক্রেতা ও বিক্রেতা রয়েছেন। নির্ধারিত এই ক্রেতা-বিক্রেতারাই হাটে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেন। বাংলাদেশের ২৫ জন বিক্রেতা ও ৬১৪ জন ক্রেতা এবং ভারতের ৫০ জন বিক্রেতা ও ৩৫৯ জন তালিকাভুক্ত ক্রেতা রয়েছেন। তাদের হাটে যাওয়া-আসা করার অনুমতি রয়েছে। তবে এ বছর বাংলাদেশ অংশে ৫৮৭ জন ক্রেতা তালিকা হালনাগাদ করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বর্ডার হাটে দুই দেশের নাগরিকরা নিজ নিজ দেশের মুদ্রা নিয়ে আসতে পারবেন। হাটে দুই দেশের মুদ্রাই চলে। তবে হাটে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ২০০ ডলার বা এর সম পরিমাণ মুদ্রার (টাকা বা রুপি) পণ্য কিনতে পারবেন। রাজিবপুরের এই বর্ডার হাটে মুদ্রা বিনিময়ের পাশাপাশি পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমেও কেনা-বেচা হয়ে থাকে বলে জানা গেছে।

হাটে প্রবেশে বা বেচা-কেনা করতে কারও কোনও ভিসা ও পাসপোর্ট প্রয়োজন হয় না। বাংলাদেশের ক্রেতা ও-বিক্রেতার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। হাটে প্রবেশ করতে তাদের এই অনুমোদিত পরিচয়পত্র বহন করতে হয়।

/এসএইচ/
সম্পর্কিত
মিয়ানমারের ১৯৬ সীমান্তরক্ষীকে ফেরত পাঠানো হবে এ মাসেই
দুর্গম পার্বত্য সীমান্ত পরিদর্শনে বিজিবির ডিজি
‘বিরোধী শক্তি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর অথচ সীমান্ত অরক্ষিত’
সর্বশেষ খবর
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
লিভারপুলের নতুন কোচ স্লট!
লিভারপুলের নতুন কোচ স্লট!
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে: ওবায়দুল কাদের
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে: ওবায়দুল কাদের
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!