X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

গরুর আবাসিক হোটেল

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৪৯আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:০২

রংপুরের মডার্ন মোড় এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে গরুর আবাসিক হোটেল। সেখানে ৩শ গরু রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিদিন মাত্র ৪০ টাকা ভাড়ায় এই হোটেলে গরু রাখা যায়। রংপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এখানে গরু রাখেন। 

ব্যবসায়ীরা জানান, রংপুর অঞ্চলের দেশি গরুর মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। ওই সব এলাকা থেকে প্রতিদিন পাইকাররা গরু কিনতে রংপুরে আসেন। আগে গরু কিনে রাখার জায়গা ছিল না। তার ওপর নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ে থাকতেন তারা। অন্যদিকে রংপুরের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে অনেক গৃহস্থ নগরীর বিভিন্ন হাটে গরু বিক্রি করতে আসেন।  প্রত্যাশিত দাম না পেলে গরু রাখার সংকটের কারণে সেদিনই তাদের বাড়ি ফিরতে হতো। ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ দূর করতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পাশে আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন গরুর এই হোটেল।

আলমগীর জানান, একটি গরু একদিন রাখার জন্য ৪০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। খড়, ভুষিসহ নানা গোখাদ্য সেখানে পাওয়া যায়। আবার বাইরে থেকেও কিনে আনতে পারেন ব্যবসায়ীরা। ফলে খামারি, গরু ব্যাপারী এবং সাধারণ গৃহস্থ নিশ্চিন্তে গরু রাখতে পারেন এই  হোটেলে।

চট্টগ্রাম থেকে গরু কিনতে এসেছেন সালাম সরকার। তিনি জানান, রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন হাটে গরু কিনতে এসে নানা সমস্যায় পড়তেন। এক ট্রাক গরু কিনতে কমপক্ষে এক সপ্তাহ কখনও কখনও তার বেশি সময়ও লাগে। আগে গরু কিনে রাখার জায়গা ছিল না। তবে এখন সে সমস্যা মিটেছে। হাতে সময় নিয়ে কয়েক হাট ঘুরে এখন গরু কিনছেন তিনি, রাখছেন আবাসিক হোটেলে। নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তা নেই। একসঙ্গে ৩০/৪০টি গরু কেনা হলে ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছেন।  

গরুর জন্য এমন আরও কয়েকটি আবাসিক হোটেল করার দাবি জানান সালাম।

কুমিল্লা থেকে গরু কিনতে আসা ব্যাপারী আখতার হোসেন বলেন, ‘আগে গরু কিনে রাখা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতো। কয়েকটি গরু ছিনতাইও হয়েছে আমার। এখন গরুর আবাসিক হোটেল হওয়ায় সব দুঃচিন্তা মিটে গেছে। গরু হারানো, ছিনতাই কিংবা কেনার পর গরুকে খাওয়ানোর কোনও ঝামেলা নেই।’

গরুর হোটেলে পাঁচ জন কর্মচারী আছেন। তারা হোটেলটি পরিষ্কার রাখেন। কর্মচারী রহিম মিয়া বলেন, ‘আমাদের প্রতিদিন ৫শ টাকা আয় হয়। সংসারে অভাব কিছুটা হলেও দূর হয়েছে। এখানে গোখাদ্য বিক্রি করেন প্রায় ২০ জন। তাদেরও কর্মসংস্থান হয়েছে।’

গরুর হোটেল মালিক আলমগীর জানান, ১০ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে জায়গাটি মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া নিয়েছেন তিনি। আপাতত ৩শ গরু রাখা যায় সেখানে। তবে তার পরিকল্পনা আছে কমপক্ষে ১ হাজার গরু রাখার ব্যবস্থা করার। এখানে জায়গা কম থাকায় শুধু গরু রাখার ব্যবস্থা আছে। ব্যবসায়ীদের থাকতে হয় বাইরে কোথাও।

ভবিষ্যতে ব্যবসায়ীদের থাকার ব্যবস্থাও করতে চান তিনি।

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সিরাজুল হক জানান, গরুর আবাসিক হোটেল ভালো উদ্যোগ। গরু বেচাকেনা করতে আসা অনেকে এতে উপকৃত হচ্ছেন। এখানে কর্মসংস্থানও হয়েছে অনেকের। 

/আরআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ ডিসি ও এসপিদের
উপজেলা নির্বাচনমন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ ডিসি ও এসপিদের
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা