আগামী আগস্ট থেকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তিন এলাকায় চালু হতে যাচ্ছে ই-রিকশা। এলাকা তিনটি হলো– উত্তরা, ধানমন্ডি ও পল্টন। পর্যায়ক্রমে আরও এলাকায় এটি চালু করা হবে।
শনিবার (২৮ জুন) ডিএনসিসির অডিটোরিয়ামে ‘তিন চাকার স্বল্প গতির ব্যাটারিচালিত রিকশা (ই-রিকশা) চালক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি’র উদ্বোধনকালে এ কথা জানান ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
তিনি বলেন, বর্তমান যে রিকশাগুলো আছে সেগুলো এখনই উঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেই। ওই রিকশার পাশাপাশি নতুন ই-রিকশা চলবে। ধাপে ধাপে পুরানো রিকশা কমিয়ে আনা হবে।
চালক প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানানো হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধানে ও ব্র্যাকের সহযোগিতায় ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এই উদ্যোগের আওতায় প্রথমে মাস্টার ট্রেইনার গড়ে তোলা হবে, যারা পরে মাঠ পর্যায়ে চালকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
মাস্টার ট্রেইনার তৈরির লক্ষ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন যুব উন্নয়ন অধিদফতর এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থী, যুব মহিলা ও পুরুষদের মধ্য থেকে ২০০ জন এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে ১০০ জনসহ মোট ৩০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
উদ্বোধনকালে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ১০টি ভেন্যুতে প্রথম পর্যায়ে ২০০ জন মাস্টার ট্রেইনারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
আগামী জুলাইয়ে অবশিষ্ট ১০০ জনের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা হবে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে এসব মাস্টার ট্রেইনার মাঠ পর্যায়ে ই-রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
এছাড়া ইতোমধ্যে ‘তিন চাকার স্বল্পগতির ব্যাটারিচালিত রিকশার স্ট্যান্ডার্ড মডেল ডিজাইন ও স্পেসিফিকেশন’ অনুমোদিত হয়েছে। এই মডেল সংক্রান্ত তথ্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণসহ দেশের সব সিটি করপোরেশনে পাঠানো হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
অনুষ্ঠান থেকে জানানো হয়, ই-রিকশা চলাচলের জন্য নীতিমালা তৈরি হয়েছে; যা সিটি করপোরেশন এলাকায় তিন চাকার স্বল্পগতির ব্যাটারিচালিত রিকশা (ই-রিকশা) চলাচল প্রবিধান, ২০২৫’ নামে পরিচিত হবে। এই নীতিমালায় বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ই-রিকশা চলাচলে সাধারণ সড়ক ব্যবহার ও যাত্রী পরিবহন নিয়মাবলিতে বলা হয়– তিন চাকার স্বল্পগতির ব্যাটারিচালিত রিকশা (ই-রিকশা) শুধু সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ নির্ধারিত রাস্তায় চলাচল করবে।
এছাড়া হাইওয়ে, এক্সপ্রেসওয়ে বা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও বাস চলাচলের সড়কে এই ই-রিকশা চলাচল করবে না। সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ অনুমোদিত নয় এমন সড়কে চলাচল করবে না। ফুটপাতে চলাচল কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
ই-রিকশার চালকরা সর্বদা বাম লেনে চলাচল করবে এবং যানজট সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকবে। চালকদের ড্রাইভিং করার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং জরিমানাযোগ্য অপরাধ। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত এলাকার বাইরে ই-রিকশা চলাচল করবে না। দুই জনের বেশি যাত্রী বহন কিংবা অতিরিক্ত ভার বহন করবে না। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওভারটেক এবং লেন পরিবর্তন করবে না। ই-রিকশায় উচ্চ শব্দের হর্ন বিশেষ করে ৪০ ডেসিবেলের ওপরে হর্ন বাজানো যাবে না।