আসন্ন সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-২ (সদর) আসনে জমে উঠেছে ত্রিমুখী লড়াই। প্রার্থীরা বিভিন্ন গ্রামেগঞ্জে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। দিনরাত জোর এগিয়ে চলছে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আসাদুজ্জামান নূর, স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন ও জাতীয় পার্টির শাহাজান আলী চৌধুরীর প্রচার-প্রচারণা। এই আসনে মূলত এই তিন প্রার্থীর মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
এই আসনে আরও একজন প্রার্থী থাকলেও প্রচারে তিনি পিছিয়ে আছেন। তিনি হলেন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের দলীয় প্রার্থী মো. মোছালিন ইসলাম (ডাব)।
সরেজমিনে, জেলা সদরের ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়ে। উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের ২নং ওয়ার্ডের ভোটার ব্রজেন্দ্র নাথ রায় বলেন, পাড়া মহল্লায় দেখা যাচ্ছে নৌকার পোস্টার, ব্যানার। পাশাপাশি এই গ্রামে চোখে পড়ে লাঙ্গল ও ট্রাকের পোস্টারও।
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর গত ১৫ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ভোট প্রার্থনা করছেন। দিচ্ছেন নতুন উন্নয়নের আশ্বাসও। শেখ হাসিনা সরকারের অসামপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে ও চলমান উন্নয়নকে ধরে রাখতে নৌকায় ভোট চাইছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক তিনি বলেন, নূরের আমলে উত্তরা ইপিজেড, যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, নার্সিং ইনস্টিউট, ২৫০ শয্যার হাসপাতাল, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, দারোয়ানি সুতাকল, সৈয়দপুর টু নীলফামারী রাস্তা সম্প্রসারণ, নীলফামারী সরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। এ ছাড়াও মডেল মসজিদ, নীলসাগর মিউজিয়াম (যাদুঘর) আন্তর্জাতিক মানের শেখ কামাল স্টেডিয়ামসহ মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
এদিকে, সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন (ট্রাক) এবার ভোটের মাঠে বেশ সরব। তিনি সদর উপজেলার পরিষদের ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে এলাকায় মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ ও গ্রামেগঞ্জে রাস্তা ঘাট করে দিয়েছেন প্রচুর। এ কারণে এলাকার উন্নয়নে তার অবদান রয়েছে। এ ছাড়াও একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভোটের মাঠে পাকাপোক্ত অবস্থানে রয়েছেন।
এই প্রার্থী বলেন, রাজনীতি করে মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত নীলফামারী গড়তে চাই। সেই লক্ষ্যে জেলাবাসীর জন্য সারাজীবন ন্যায়ের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছুই নেই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। আশা করি, জনগণ আমাকে ভোট দেওয়ার জন্য আমার দিকে তাকিয়ে আছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে আমি জিতে যাবো।
এরপরেই আছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও একাধারে ৩০ বছরের বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক (৮ বছর সাধারণ সম্পাদক) পদে বহাল থাকা শাহাজান আলী চৌধুরী (লাঙ্গল)।
জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, আসনটি জাতীয় পার্টির ভোট ব্যাংক। এবারে লাঙ্গলের সমর্থক ও নেতাকর্মীর সংখ্যাও বেড়েছে। আমরা সাংগঠনিকভাবে অনেকটাই শক্তিশালী এবং তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের প্রার্থী সদরের কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাস মালিক সমিতির সভাপতি শাহাজান আলী চৌধুরীর লাঙ্গল প্রতীকের গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। এলাকায় সুনামসহ তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। ভোট স্বচ্ছ হলে এই আসনে আমরা শতভাগ বিজয় লাভ করবো ইনশাল্লাহ।