গাইবান্ধার সদর উপজেলায় মৃত্যুর ৪৩ দিন পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে সাদিক হোসেন (১৯) নামে এক তরুণের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহ উত্তোলনের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১ জুন) দুপুরে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিমের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
সাদিক হোসেন সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের দক্ষিণ কুমরপুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে। তিনি তুলসীঘাট ছামছুল হক ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত ১৯ এপ্রিল বিকালে বেড়ানোর কথা বলে সাদিককে তার সুজকি মোটরসাইকেলসহ বাড়ি থেকে ডেকে নেয় পূর্বপরিচিত আকাশ (২০) নামে এক তরুণ। এরপর সড়ক দুর্ঘটনায় সাদিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় আকাশের বাবা সাজু মিয়া। পরে খবর পেয়ে সাদিকের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে এসে দাফন করেন স্বজনেরা।
এদিকে, সাদিকের মরদেহ দাফনের পর পরিবারের লোকজন জানতে পারেন যে সাদিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাননি। সাদিকের স্বজনদের অভিযোগ, পূর্বপরিকল্পিতভাবে আকাশ ও তার বাবা সাজু মিয়া সাদিক হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছেন। সাদিককে হত্যার পর তারা সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর নাটক সাজিয়েছেন।
এ ঘটনার পর গত ১০ মে সাঘাটা থানায় মামলা করেন সাদিকের ভাই মোশারফ হোসেন। মামলায় আকাশ ও তার বাবা সাজু মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা তিন-চার জনকে আসামি করা হয়। পরে মামলা ও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সাদিকের মরদেহ উত্তোলনের আদেশ দেন। অভিযুক্ত সাজু মিয়া সদর উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত জামাত আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় সাদিকের ভাই মোশারফ হোসেন বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে ছোট ভাই সাদিককে ডেকে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে আকাশসহ কয়েকজন। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কথা বললেও সাদিকের সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেলের কোনও ক্ষতিই হয়নি। মূলত বিয়ের আগ থেকেই আমার স্ত্রীর সঙ্গে আকাশের সম্পর্ক ছিল। এর জের ধরেই আমার ভাই সাদিককে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর হত্যা মামলা না করার জন্য আকাশের বাবা সাজু মিয়া বিভিন্নভাবে আমাদের হুমকি দিয়ে আসেন। আদালতের নির্দেশে সাদিকের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।’ সাদিকের হত্যার সঙ্গে জড়িত আকাশ ও তার বাবা সাজু মিয়াসহ আসামিদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে নিহত সাদিকের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।’