রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের বাড়িতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পণ্য বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রংপুর নগরীর মুলাটোল এলাকায় নিজ বাড়িতে ব্যানার লাগিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ উদ্দিনের ছেলে এম শাফিনুর মমতাজ টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন। অথচ শাফিনুর কোনও ব্যবসায়ী নন, তিনি টিসিবির ডিলারশিপ কীভাবে পেলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, মুলাটোল এলাকায় মমতাজ উদ্দিনের দোতলা বাসার নিচতলার একটি কক্ষে চাল, ডাল ও তেল নিয়ে বসে আছে দুই জন। আর বাসা ও বাইরে নারী-পুরুষের তিনটি লাইন। সবার হাতে হাতে টিসিবির পণ্যের কার্ড।
কার্ডধারী শরীফা বেগম, আবুল কালামসহ সবাই জানালেন, এর আগে কখনও আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে টিসিবির পণ্য বিক্রি করতে দেখা যায়নি। হঠাৎ তাদের বাসায় টিসিবির পণ্য বিতরণের উদ্দেশ্যটা কী- জানেন না এলাকাবাসী।
টিসিবির পণ্য বাসায় বিক্রির বিষয় জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের ছেলে শাফিনুর মমতাজ বলেন, আমার নামে টিসিবির ডিলারশিপ আগে কখনও বিক্রি করিনি। এবার সিটি করপোরেশন থেকে বাসায় টিসিবির পণ্য বিক্রি করতে বলায় যাদের কার্ড রয়েছে তাদেরকে পণ্য দেওয়া হচ্ছে।
তবে তার ডিলারশিপের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, তার সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ চার মাস আগেই শেষ হয়েছে। এটি তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বৃদ্ধ বলেন, এর আগে কখনও দেখিনি, এই ডিলারকে টিসিবির পণ্য বিতরণ করতে। হঠাৎ আজ সকালে দেখি, নিজ বাসার একটি কক্ষ থেকে টিসিবির পণ্য বিতরণ করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর নগরীতে টিসিবির ডিলারদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের। তারা মাসিক বরাদ্দ পাওয়া মালামাল কালোবাজারে বিক্রয় করে দিতেন। ফলে কার্ডধারীরা কালেভদ্রে টিসিবি পণ্য পেতেন।
এ বিষয়ে টিসিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, টিসিবির ডিলারশিপ পেতে হলে অবশ্যই তাকে সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্সধারী এবং তার নিজস্ব দোকান থাকতে হবে। রংপুর নগরীতে বেশির ভাগ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের নামে ডিলারশিপ রয়েছে। তারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ডিলারশিপ নিয়েছে।
এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স শাখার কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকেও অফিস কক্ষে পাওয়া যায়নি এবং মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।