বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ ও আলটিমেটামের মুখে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজসহ পাঁচ বিচারককে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের উপসচিব (প্রশাসন-১) এ এফ এম গোলজার রহমান রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ বদলির আদেশ দিয়েছেন।
এর মধ্যে চার বিচারককে সংযুক্ত কর্মকর্তা হিসেবে আইন ও বিচার বিভাগে বদলি করা হয়েছে। অপর একটি প্রজ্ঞাপনে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুজ্জামানকে পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বদলি করা হয়।
নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে চার বিচারকের অপসারণ দাবিতে ২২ জানুয়ারি পঞ্চগড়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখা। এদিন পঞ্চগড় আদালত চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে চার বিচারকের অপসারণে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। অবশেষে তাদের বদলির আদেশ এলো।
তারা হলেন- পঞ্চগড় আদালতের জেলা ও দায়রা জজ মো. গোলাম ফারুক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মণ্ডল, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুজ্জামান এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুহেনা সিদ্দিকী। তবে অপসারণের দাবি না উঠলেও অপর একটি প্রজ্ঞাপনে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুজ্জামানকে পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বদলি করা হয়।
পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. জমিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিচারকদের বদলির বিষয়টি শুনেছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি বলেন, ‘জেলা ও দায়রা জজ মো. গোলাম ফারুক আওয়ামী লীগ সরকারের মদতপুষ্ট। আদালতে নিয়োগে দুর্নীতি করে সাবেক আইনমন্ত্রীর এলাকার লোকদের বারবার নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। সরকারি বাড়ি ভাড়া নেওয়া সত্ত্বেও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মণ্ডল আদালতকে নিজের বাসভবন বানিয়েছেন। একইভাবে অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুজ্জামান এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুহেনা সিদ্দিকী। শেখ হাসিনার সময়ে প্রশাসনের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হলেও তার দোসর এই বিচারকদের এখনও সরিয়ে নেওয়া হয়নি। তাই তারা শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এখনও নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা। তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে নেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলাম আমরা। দেরিতে হলেও অবশেষে তাদের বদলি হয়েছে।’