রংপুরে বোরকা পরে দুই নারী অভিনব কায়দায় স্বর্ণের দোকান থেকে ১০০ ভরি স্বর্ণ চুরি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (১৪ মে) দুপুরে নগরের বেতপট্টি এলাকায় ‘লক্ষ্মী জুয়েলার্স’ স্বর্ণের দোকানে এ চুরির ঘটনা ঘটে। এতে দেড় কোটি টাকার বেশি স্বর্ণ চুরি হয়েছে বলে দাবি করেছেন দোকান মালিক।
দোকান মালিক জানান, দুপুর ১টার দিকে দুই দলে বিভক্ত হয়ে বোরকা পরা পাঁচ নারী দোকানে প্রবেশ করেন। তারা গহনা দেখার নামে তাকে নানাভাবে ব্যস্ত রাখেন এবং কয়েকবার গহনা ওয়াশ করানোর জন্য একজন কর্মচারীকে বাইরে পাঠান। একপর্যায়ে দুপুর দেড়টার দিকে তাদের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে ক্যাশ কাউন্টারের পাশে রাখা স্বর্ণের স্টক বক্সটি কৌশলে চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যান তারা।
লক্ষ্মী জুয়েলার্সের মালিক তিলক বসাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি ও আমার ছোট ভাই পুলক বসাক দোকানটির মালিক। দুপুর ১টার দিকে প্রথমে তিন নারী বোরকা পরে দোকানে আসেন। তারা স্বর্ণের একটি রিং কেনেন। এরপর আরও দুই নারী বোরকা পরে দোকানে আসেন। তারা বিভিন্ন গহনা দেখার নামের আমাদের ব্যস্ত রাখেন। পাঁচ নারী একসঙ্গে দোকান থেকে বের হওয়ার পর দেখি, স্বর্ণের স্টক বক্সটি নেই। সেখানে ১০০ ভরি স্বর্ণ ছিল। যার বাজারমূল্য দেড় কোটি টাকার বেশি। পরে দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, পাশে থাকা দুই নারী স্বর্ণের বক্সটি নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সবার মুখ ঢাকা থাকায় কাউকে চিনতে পারিনি।’
সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, একপাশে দুই নারীকে বিভিন্ন ধরনের গহনা দেখাচ্ছেন দোকান মালিক। তাদের পাশ ঘেঁষে দোকানে সাজানো গহনা থেকে একেক ধরনের গহনা নিয়ে এক নারী আরেক নারীকে পরিয়ে দেখছেন। এ সুযোগে ওই নারী দোকানের আলমারির ভেতর থেকে একটি ব্যাগ নিয়ে (স্বর্ণের স্টক বক্স) অপর নারীর কাছে দিলে তিনি আচলের নিচে লুকিয়ে ফেলেন। এরপর তারা চলে যান।
রংপুর জুয়েলার্স ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য ও সুমাইয়া জুয়েলার্সের মালিক শাহ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এর আগেও পাকিস্তানি পরিচয়ে দুই নারী স্বর্ণের দোকানে এসে গহনা গিলে ফেলেছিল। এমন চুরির আরও কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। আমরা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছি।’
রংপুর জুয়েলার্স ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনামুল হক সোহেল বলেন, ‘দিনদুপুরে এমন চুরির ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। নগরীতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন প্রয়োজন। নিরাপত্তা জোরদার করা হলে এ ধরনের চুরি ঠেকানো সম্ভব। না হয় এভাবে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটতে থাকবে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ওই নারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন স্থানে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে তাদের শনাক্তের চেষ্টা করছি আমরা। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’