‘এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট)’ প্রকল্প দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নসহ উচ্চশিক্ষার রূপান্তর ঘটাবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
হিট প্রকল্পের প্রথম মিশন সভার আলোচনা শেষে বুধবার (২১ জুন) ইউজিসির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে হিট প্রকল্পের প্রথম ইমপ্লিমেন্টেশন সাপোর্ট মিশন (আইএসএম) সভায় সভাপতির বক্তব্যে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, প্রকল্পটির গতি ত্বরান্বিতকরণ, আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ ও উদ্যোক্তা হিসেবে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।
ইউজিসি ভবনে মঙ্গলবার (২০ জুন) সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) উপাচার্য ড. রুবানা হক, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন্স অফিসার মোখলেসুর রহমান, ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়াসহ ইউজিসি, বিশ্ব ব্যাংক ও এইউডব্লিউ’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক আলমগীর বলেন, হিট প্রকল্প দেশের শিক্ষা ও গবেষণাসহ উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন খাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে। এর মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উচ্চশিক্ষায় গৃহীত কার্যকর উদ্যোগগুলো ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতিতে শিক্ষা খাতের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা এবং উচ্চশিক্ষা সম্পন্নকারীদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ কর্মক্ষেত্রের সুযোগ তৈরি করা। গৃহীত এ প্রকল্পটি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নারীদের উন্নয়নের সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি ও তাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করাও প্রকল্পটির অন্যতম উদ্দেশ্যে। এটি নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। এর মাধ্যমে নারীদের উচ্চশিক্ষার ব্যাপক রূপান্তর ঘটাবে।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের উপাচার্য ড. রুবানা হক বলেন, হিট প্রকল্পের মাধ্যমে আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক শক্তিশালী হবে এবং এই প্রকল্পের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের পথ সুগম হবে। উচ্চশিক্ষিতদের জন্য চাকরির সুযোগ সৃষ্টি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নারী শিক্ষার্থীর হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে। নারীর উচ্চশিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রকল্পটি একটি আঞ্চলিক মডেল হবে বলে তিনি মনে করেন।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন্স অফিসার ড. মোখলেসুর রহমান ইউজিসিকে হিট প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু এবং প্রকল্প পরিচালক নিয়োগে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও ইউজিসি’র সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংক এ লক্ষ্যে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলে তিনি জানান।
সভা শেষে বিশ্বব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি দল ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এই সময় ইউজিসি চেয়ারম্যান উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সকলকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্প শুরু হবে চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ইউজিসি। মোট ব্যয়ের মধ্যে দুই হাজার ৩৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকার এবং এক হাজার ৯৮৩ কোটি ১১ লাখ টাকা বিশ্বব্যাংক বহন করবে বলে জানায় ইউজিসি।
