২০২৭ সাল থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে এবং পর্যায়ক্রমে তা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের এসব তথ্য জানান।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে স্থির করেছি ২০২৭ এর (শিক্ষাবর্ষের) জন্য তৈরি হবে নতুন শিক্ষা কার্যক্রম। আমরাও এরই মধ্যেই এর কাজ শুরু করেছি। দীর্ঘ মেয়াদে শিক্ষাক্রমের নতুন স্বপ্ন দেখি, নতুন পরিকল্পনা যদি আমরা করি; সেখানে প্রযুক্তির বিষয় থাকবে, অন্তর্ভুক্তির বিষয় থাকবে, মান-সম্মত শিক্ষা, তবে অবশ্যই বর্তমানে যে শিক্ষাক্রম তার থেকে মুক্ত চিন্তা করতে হবে আমাদের। সেটা যেন করা সম্ভব হয় সে জন্য নিজেদের ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা, জাতীয় একটা ঐকমত্যের প্রয়োজন রয়েছে। সেটা আমাদের বিবেচনার মধ্যে রয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কাজ করছি।
সি আর আবরার বলেন, যখন বই ছাপা হবে, তখন হয়ত আমরা দায়িত্বে থাকবো না। কিন্তু যারা দায়িত্বে থাকবেন, তারা যাতে একটা ভালো মানসম্পন্ন শিক্ষাক্রম ব্যবস্থা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শুরু করে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তার জন্য যে ভিত্তিভূমি সেটা অর্গানাইজ করে যেতে পারবো বলে আমরা মনে করি। ২০১২ সালে বিশেষ পরিস্থিতিতে শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা করা হয়েছিল, সেটা আগামী বছরও থাকবে। তবে পরে যেই কনস্টেন্টের মধ্যে আমরা কাজ করছি আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে পারবো।
আমরা কি বলতে পারি অন্তর্বর্তী সরকার নতুন একটা পাঠ্যক্রমের শুরু করে দিয়ে যাচ্ছে– এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এটাই সুন্দর কথা। আগামী বছরের শিক্ষাক্রমে যাতে ভুল না থাকে সে জন্য আমরা, বিশেষভাবে আমি নিজে তৎপর ও তদারকিতে থাকবো।
শিক্ষা সংস্কার কমিশন করার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ সরকারের অধীন শিক্ষা কমিশন খুবএকটা কার্যকর হবে, কমিশন তার মেয়াদ সম্পন্ন করতে পারবে সেই সম্ভাবনা সে রকমভাবে দেখি না। তবে যেই লক্ষ্যে এটা করা দরকার, সেই লক্ষ্যেই মোটামুটি ভালোভাবেই আমরা কাজ শুরু করেছি। আগের যে কমিশনগুলো সেগুলোর থেকে আমরা সুপারিশ নিতে পারি।
তিনি বলেন, ‘যারা বলছেন শিক্ষা কমিশন দরকার, আমি তাদের প্রশংসা করি। কিন্তু সেটাই যে একমাত্র হতে হবে, সেটা কিন্তু না। অন্যান্য মাধ্যমে আমরা এগোতে পারি। সেটা হলে ভালো হতো, তবে বিভিন্ন কারণে যেহেতু সেটা এখন করা যাচ্ছে না। সে জন্য আমরা বিকল্প এই পদ্ধতির মধ্যে যাচ্ছি। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে ডেফিনেটলি কাম আপ আ রিজনেবল ডকুমেন্ট। মেবি ফোকাসিং অন সেকেন্ডারি এডুকেশন, তবে এখনও ঠিক করিনি।
সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, গত বছর যে বই ছিল, সেই বইটি একটুখানি পরিমার্জন করে ভুল ত্রুটি কমিয়ে নিয়ে এসে এ বছর দিচ্ছি। একইসঙ্গে আমরা কাজ করছি, ২০২৭ সালে যাতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন কারিকুলামের (শিক্ষাক্রম) আওতায় আনতে পারি।
সিনিয়র সচিব বলেন, আমরা মনে করি, একসঙ্গে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা কোনও সুচিন্তিত বিষয় নয়। আমাকে নতুন পাঠ্যক্রম যদি দিতে হয় তা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দিতে হবে। ক্রমান্বয়ে প্রতি বছরে এই শিক্ষার্থীদের নিয়েই সপ্তম শ্রেণিতে যখন যাবে নতুন পাঠ্যক্রম হবে, অষ্টম শ্রেণিতে যখন যাবে তখন সেখানে নতুন পাঠ্যক্রম হবে। এই জার্নিটা হচ্ছে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। এই জার্নিটাই আমরা ক্রমান্বয়ে নতুন পাঠ্যক্রমের আওতায় যাবো এবং সেটা শুরু হবে ২০২৭ থেকে।
শিক্ষা উপদেষ্টা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের ছাড়াও কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।