X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শুভ জন্মদিন পপগুরু

বিনোদন রিপোর্ট
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৫৮আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩:৩৪

আজ (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলা পপ গানের পুরোধা আজম খানের জন্মদিন। যাকে ভালোবেসে সর্বস্তরের শ্রোতারা ডাকেন ‘পপগুরু’ সম্বোধনে।

১৯৫০ সালের এই দিনে ঢাকার আজিমপুর কলোনির ১০নং সরকারি কোয়ার্টারে জন্ম নেন আজম খান। সংগীতশিল্পী পরিচয়ের আগে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা।

আর গানে তার কর্মজীবন শুরু হয় গত শতকের ষাটের দশকের শেষের দিকে। ১৯৭২ সালে বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তোলেন ব্যান্ড উচ্চারণ। যা দেশব্যাপী সংগীতের জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

পশ্চিমা রক সংগীতের আদলে তিনি বাংলা সংগীতে যুক্ত করেন নতুন ধারা। পপগুরু, পপ সম্রাট ইত্যাদি নানা বিশেষণে পরিচিত হলেও সংগীতাঙ্গনে ‘গুরু’ বলেই স্মরণ করে থাকেন শিল্পীরা। 

তবে এবারের জন্মদিনের বিশেষভাবে হচ্ছে না স্মরণ অনুষ্ঠান। তেমন কোনও আয়োজনের খোঁজও পাওয়া যায়নি।  

অন্যদিকে, তিনি ও তার গানের প্রসারে কাজ শুরু করেছিল ‘শিল্পী আজম খান ফাউন্ডেশন’। কিন্তু ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যপদ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা ও আর্থিক সংকটের কারণে এর সব কার্যক্রম ২০১৭ সালে মুলতবি করে তা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

আজম খানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকায়। তার পুরো নাম মাহবুবুল হক খান। বাবা আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও মা জোবেদা খাতুন। তার শৈশবের পাঁচ বছর কাটে আজিমপুর কলোনিতে। তারা ৪ ভাই ও এক বোন ছিলেন। ১৯৫৫ সালে তিনি প্রথমে আজিমপুরের ঢাকেশ্বরী স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে তার বাবা কমলাপুরে বাড়ি বানালে সেখানে চলে যান পরিবারসহ।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময়ে আজম খান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তখন তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসংগীত প্রচার করেন।
১৯৭০ সালে টিএন্ডটি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন তিনি। ১৯৭১ সালে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন আজম খান। কুমিল্লার সালদায় প্রথম সরাসরি যুদ্ধ করেন। আজম খান ছিলেন দুই নম্বর সেক্টরের একটি সেকশনের ইনচার্জ। তিনি সেকশন কমান্ডার হিসেবে ঢাকা ও এর আশপাশে বেশ কয়েকটি গেরিলা আক্রমণে অংশ নেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর তার ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’ দেশব্যাপী সংগীত জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৯৭২ সালে বন্ধু নিলু আর মনসুরকে গিটারে, সাদেককে ড্রামে আর নিজেকে প্রধান ভোকাল করে অনুষ্ঠান শুরু করেন। ওই বছরই তার ‘এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ আর ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি বিটিভিতে প্রচার হয়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। পরবর্তী সময় বিটিভিতে ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’ গান গেয়ে হইচই ফেলে দেন আজম খান।

উচ্চারণ তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘আমি যারে চাইরে’, ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’, ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘অ্যাকসিডেন্ট’, ‘অনামিকা’, ‘অভিমানী’, ‘আসি আসি বলে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘পাপড়ি’, ‘বাধা দিও না’, ‘যে মেয়ে চোখে দেখে না’ ইত্যাদি।
১৯৮১ সালের ১৪ জানুয়ারি সাহেদা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় আজম খানের। সহধর্মিণী মারা যাওয়ার পর থেকে একাকী জীবন কাটান এ কিংবদন্তি। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক। বড় মেয়ে ইমা খান, মেজো ছেলে হৃদয় খান ও ছোট মেয়ে অরণী খান।
১৯৮২ সালে ‌‘এক যুগ’ নামে তার প্রথম ক্যাসেট বের হয়। এরপর তার বেশ কিছু ক্যাসেট ও সিডি বাজারজাত হয়। তার প্রথম সিডি বের হয় ১৯৯৯ সালের ৩ মে ডিস্কো রেকর্ডিংয়ের প্রযোজনায়। আলাল ও দুলাল গানচিত্রে
গানের বাইরেও দেশের মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি আলোচিত কাজও করেছেন আজম খান। ১৯৮৬ সালে ‘কালা বাউল’ নামে হীরামনের একটি নাটকে এবং ২০০৩ সালে শাহীন-সুমন পরিচালিত ‘গডফাদার’ চলচ্চিত্রের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। সর্বশেষ ২০১০ সালে কোবরা ড্রিংকসের বিজ্ঞাপনেও মডেল হন।

২০১০ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হন। ২০১১ সালের ৫ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই পপসম্রাট। তাকে সমাহিত করা হয় মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। আজম খান

/এম/
সম্পর্কিত
চাচার ১০ গান নিয়ে ভাতিজার চমক (ভিডিও)
স্মরণে আজম খানচাচার ১০ গান নিয়ে ভাতিজার চমক (ভিডিও)
মুক্তিযোদ্ধা থেকে যেভাবে পপগুরু হয়েছিলেন আজম খান
জন্মদিনে স্মরণমুক্তিযোদ্ধা থেকে যেভাবে পপগুরু হয়েছিলেন আজম খান
অস্ত্র হাতে বীর, গানে তিনি গুরু
প্রয়াণ দিনে স্মরণঅস্ত্র হাতে বীর, গানে তিনি গুরু
পপগুরু নেই আজ ১১ বছর
পপগুরু নেই আজ ১১ বছর
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
অবশেষে মুক্তির বার্তা
অবশেষে মুক্তির বার্তা
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
হলিউডের প্রস্তাব ফেরালেন ক্যাটরিনা!
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
টিভি ধারাবাহিকে খলনায়িকা রিনা খান
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!
এই গরমে শিরোনামহীনের শীতল সুর!