সংবাদমাধ্যম থেকে সোশ্যাল হ্যান্ডেলের পাতা খুললেই দেখা যায় খারাপ কিংবা নেতিবাচক খবরের ছড়াছড়ি। সঙ্গে কাদা ছোড়াছুড়ি, বিতর্ক-সমালোচনা আর নিন্দার গল্পগাথা। তারকাদের সামাজিক কিংবা মানবিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধেও নেতিবাচক শব্দের মিছিল লেগে থাকে হরহামেশা। কিন্তু এসব নেতিবাচক ঝড়ের ভেতরে কি কোনও ইতিবাচক বিষয় নেই? যা নিন্দা-সমালোচনার স্রোতের বিপরীতে ভালো-আলোর দিকে উৎসাহিত করবে ভক্ত কিংবা সমাজকে। থাকলে সেটা কেমন? এবারের ঈদ বিশেষ আয়োজনে শোবিজ তারকাদের কাছ থেকে তেমন কিছুই জানার চেষ্টা করেছে বাংলা ট্রিবিউন। এ পর্বে রইলো অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলার দৃষ্টিভঙ্গি।
অভিনেত্রী এই ঈদে রীতিমতো কাঁপুনি ধরিয়ে দিলেন ‘শায়লা ভাবি’ তথা ‘বৈয়ম ফাকি’ চরিত্রে হাজির হয়ে। চাঁদরাতে প্রকাশ হওয়া ওয়েব সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’-এ মিথিলা যেন পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খানের সঙ্গে। কিংবা অনেকে এভাবেও বলেন, নাটকে, সিরিজে, সিনেমায় মিথিলা এ পর্যন্ত যত চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তারমধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং এবং সেটি উতরে গেছেন দারুণ অভিনয়ে।
না, তিনি এই প্রসঙ্গে জাবর কাটেননি। বরং আরও ক’টা দিন অপেক্ষা করে দর্শক-সমালোচকদের প্রতিক্রিয়া উপভোগ করতে চাইছেন। তার আগে বললেন, ‘এজ এন আর্টিস্ট হিসেবে যদি বলি, আমাদের সিনেমা আর ওটিটি যেখানে এসে দাঁড়ালো, সেটা সত্যিই প্রশংসার। আমাদের গল্প আর নির্মাণগুলো এখন অনেক বেশি আন্তর্জাতিক মানের। মানে গ্লোবাল একটা বিষয় তৈরি করতে পেরেছি। এমনকি অভিনয়েও আমাদের শিল্পীরা এখন অনেক বেশি প্রশংসিত হচ্ছে দেশ ও বিদেশে। যখন বিদেশে যাই এবং আমাদের বিভিন্ন সিনেমা ও কনটেন্টের গল্প শুনি, তখন টের পাই আমাদের উন্নতির। যেটা ৫-৭ বছর আগেও শুনতে পেতাম না।’
মিথিলার ধারণা, বাংলাদেশে কনটেন্ট তৈরির যে মান ও অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে, সেটা ক্রমশ বাড়বে সামনে।
লোকাল কনটেন্ট না হয় গ্লোবাল হচ্ছে, কিন্তু দেশের আর্থ-সামাজিক কিংবা জীবনমান বিষয়ে এই অভিনেত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি কেমন? সেটি নিশ্চয়ই অতোটা ইতিবাচক নয়! প্রশ্নটি তাকে এই জন্য করা, কারণ আফ্রিকা অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে ব্র্যাকের হয়ে শিশু ও নারী উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন অভিনেত্রী।
মিথিলা বলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমি খুবই আশাবাদী একজন মানুষ। আমি খুবই অপটিমিসটিক একজন মানুষ। চারপাশে নেগেটিভ তো থাকবেই, বাট ভালোর প্রতি ফোকাস করার চেষ্টা করি। এটাও ঠিক, খারাপ ভালো মিলিয়েই মানুষ ও সমাজ। সেই বিবেচনায় আমি যদি গত ৫০ বছরের বাংলাদেশের দিকে তাকাই, তবে সোশ্যাল ইন্ডিকেটর হিসেবে বিশ্বে আমাদের অবস্থান বেশ ভালো। এখানে শিশুমৃত্যুর হার আগে যা ছিল সেটি এখন আমূল বদলেছে। বা নারীর ক্ষমতায়নের যে অবস্থা ছিল, সেটি পুরো বদলে গেছে। এই দুটো বিষয় আমি আমার এনজিও কর্মসূত্রেই প্রতিনিয়ত টের পাই। ফলে এই বিষয়গুলো বলতে বা প্রকাশ করতে তো দ্বিধা নেই। এগুলো আমাদের অর্জন।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘গ্লোবাল বাস্তবতায় পৃথিবীর বহু দেশে বাংলাদেশকে সাকসেস স্টোরি হিসেবে ধরা হয়। অর্থনৈতিক উন্নতির বিচারে তো বটেই, এখন সামাজিক উন্নয়নের মডেল হিসেবেও ধরা হয় বাংলাদেশকে। আমার মনে হয় গ্লোবালিও আমরা অনেক এগিয়ে আছি, আরও আগাবো। দিনশেষে এটাই বড় স্বস্তি।’
চরকিতে শায়লা ভাবি চমকের পর মিথিলা এখন অধীর হয়ে আছেন টলিউডের ‘মায়া’য়। শেক্সপিয়রের ‘ম্যাকবেথ’ অনুপ্রেরণায় তৈরি হলো রাজর্ষি দে’র এই ছবি। যাতে মাহিরা থেকে মায়া হয়ে ওঠার গল্প উঠে আসবে মিথিলার মধ্য দিয়ে। যা পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে এই এপ্রিলে।