শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্য অতি প্রাচীন শিল্প এবং এর পেছনে রয়েছে তিন হাজার বছরের পুরনো ঐতিহ্য যা বর্তমান সময়ে প্রচলিত সকল ধরনের সংগীত ও নৃত্যের অন্যতম ভিত্তি। নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্যের চর্চায় আরও উৎসাহী করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সংগীত, নৃত্য এবং আবৃত্তি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ১৪-১৫ জুলাই দুইদিনব্যাপী শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসব ২০২৩’ প্রথম দিনের আয়োজনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। দুইদিনব্যাপী এ উৎসবে দেশবরেণ্য বিশিষ্ট শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্যশিল্পীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রতিমাসে একবার হলেও শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যের আয়োজন করা হবে। দেশের প্রতিটি জেলায় এ ধরনের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। আমরা প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে ১০০০ শিক্ষার্থী তৈরির লক্ষ্য মাত্রা দিয়েছি। কোন কোন জেলায় তা ৩ হাজার ছাড়িয়েছে। সুতরাং আমাদের কার্যক্রম অব্যাহতভাবেই এগিয়ে নিচ্ছি।’
২০২৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ৫০ বছর পূর্তিতে আরও বড় পরিসরে শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসবের ঘোষণা দেন মহাপরিচালক। ধর্মের সাথে সংস্কৃতি চর্চার কোনও বিরোধ নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এসময় সংগীত, নৃত্য এবং আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক ও একাডেমির অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্য শেষে শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনার শুরুতেই ছিলো ওডিসি পরিবেশনা। দলীয় এ নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যছন্দ। এর পরে কত্থক পরিবেশন করেন মন্দিরা চৌধুরী। শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশন করেন রেজওয়ান আলী লাভলু ও কানিজ হুসনা আহমেদী। এরপরে ভরতনাট্যম পরিবেশন করেন জুয়েইরিয়াহ মৌলি এবং কত্থক পরিবেশনায় স্নাতা শাহরিন।
ধারাবাহিকভাবে শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশন করেন অন্তরা মণ্ডল এবং বিটু শীল। মনিপুরি নৃত্য পরিবেশন করবেন বাবরুল আলম চৌধুরী এবং গৌড়িও নৃত্য এগনেস র্যাচেল প্রিয়াংকা। এরপর শাস্ত্রীয় সংগীত রেজওয়ানুল হক ও প্রিয়াংকা গোপ।
আবারও কত্থক পরিবেশনা, পরিবেশন করেন অন্যতম বরেণ্য শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী সাজু আহমেদ। মনিপুরি পরিবেশন করেন বরেণ্য শাস্ত্রীয় শিল্পী তামান্না রহমান । কত্থক পরিবেশন করেন অন্যতম বরেণ্য শিল্পী মুনমুন আহমেদ।
এরপরে সংগীত পরিবেশন করেন ফকির শহিদুল ইসলাম ও পূর্ণ চন্দ্র মণ্ডল। মনিপুরি নৃত্য পরিবেশন করেন মনোমী তানজানা অর্থী এবং ভরতনাট্যম পরিবেশন করেন মোহনা মীম।
কত্থক পরিবেশন করেন মো. মাসুম হোসাইন। পরে শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশন করেন অসিত দে এবং সুস্মিতা দেবনাথ। শেষে পরিবেশিত হয় ভরতনাট্যম, পরিবেশনায় সালমা বেগম মুন্নি এবং দলীয় কত্থক পরিবেশনায় নৃত্যকলা বিভাগ ও রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়।
দেশবরেণ্য শাস্ত্রীয় শিল্পীদের নিয়ে দুদিন ব্যাপী থাকছে এ আয়োজন। আগামী ১৫ জুলাই সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকাল ৫টা থেকে।
জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত এ শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসব সকলের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে বলে নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন।