শৈশবে গান গেয়ে জাতীয় পর্যায়ে ১১টি স্বর্ণপদক অর্জন। ১৯৯৪ সালে প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশ। বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে উচ্চাঙ্গ, নজরুল আর আধুনিক গানের তালিকাভুক্ত শিল্পী। এমন সমৃদ্ধ ও ধারাবাহিক সংগীতজীবন খুব বেশি শিল্পীর মাঝে পাওয়া যায় না। যেমনটা পাওয়া গেলো সুমী শারমীনের ক্যারিয়ার গ্রাফে।
সেই ধারাবাহিকতায় ২৪ আগস্ট ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ হলো এই শিল্পীর নতুন গানচিত্র ‘চল বেঁচে থাকি’। গুঞ্জন রহমানের সমৃদ্ধ গীতিকবিতায় গানটির সুর করেছেন রাজিব হোসাইন আর সংগীতায়োজন করেছেন সুজন আরিফ। গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন রাহি আব্দুল্লাহ। এতে মডেল হয়েছেন শিল্পী নিজেই।
গানটি প্রসঙ্গে সুমীর মন্তব্য এমন, ‘চেষ্টা করেছি আরও একটি ভালো গান উপহার দিতে। প্রকাশের পর শ্রোতারাও প্রশংসা করছেন। এটাই আসলে বড় প্রাপ্তি। চেষ্টা করবো এভাবে ভালো কথা-সুরের গান নিয়মিত উপহার দেওয়ার। গানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
সুমী শারমীন মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়স থেকে ১১ বছর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ওস্তাদ সাইমুদ আলী খাঁন, ওস্তাদ ওমর ফারুক, ওস্তাদ আজাদ রহমান, শ্রী মঞ্জুশ্রী রায়, পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরীর কাছে বেনারস ঘরানায় ক্লাসিক্যাল ধ্রুপদে তালিম নেন।
নতুন কুঁড়িতে চ্যাম্পিয়নসহ জাতীয় পর্যায়ে সংগীতের বিভিন্ন বিষয়ে প্রথম হয়ে ১১টি স্বর্ণপদক অর্জন করেন এই শিল্পী। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় প্লেব্যাক, জিঙ্গেলসহ বিভিন্ন চ্যানেলে সংগীত পরিবেশন করে আসছেন।
প্রথম প্লেব্যাক করার সুযোগ হয় দেশবরেণ্য সুরকার সত্য সাহার হাত ধরে মাত্র সাত বছর বয়সে। ফোয়াদ নাসের বাবুর হাত ধরে জিঙ্গেলে নাম লেখান তিনি। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। বাপ্পা মজুমদার, রিপন খানসহ একাধিক শিল্পীর সঙ্গে গান করার পাশাপাশি নামকরা বিজ্ঞাপনের কণ্ঠযোদ্ধা সুমী শারমীন।
১৯৯৪ সালে তার প্রথম মৌলিক গানের একক অ্যালবাম প্রকাশ হয়। দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানেও থেমে থাকেননি সুমী। মেধাবী এই শিল্পী আন্তর্জাতিক ব্যান্ডের মূল ভোকালিস্ট হিসেবে বিভিন্ন দেশে সংগীত পরিবেশন করেন। ব্রিসবেন রেডিওতে প্যানেল অপারেটর, ব্রডকাস্টিং, প্রেজেন্টার হিসেবে চাকরি করে সুনামের সঙ্গে ৭ বছরের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হন।
দেশে ফিরে হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের সঙ্গে গানচিল মিউজিক থেকে ভিডিওসহ মৌলিক গান প্রকাশ হয় ২০২০ সালে। এরপর ২০২২-এ সুজন আরিফের সঙ্গে আরেকটি মৌলিক গান প্রকাশ হয় এই শিল্পীর। এ বছর সুমী শারমীন বাংলাদেশ সরকারের জয়িতা অন্বেষণে শ্রেষ্ঠ জয়িতা পদক অর্জন করেন।
গানের পাশাপাশি তিনি লেখালেখির সঙ্গেও জড়িত। এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক জার্নালসহ একক বই ১৮টি। তিনি জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃত গীতিকার হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন।