X
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
জন্মদিনে স্মরণ

নিজেকে কারাবন্দি আর সমাজকে কারাগার ভাবতেন ঋতুপর্ণ

বিনোদন ডেস্ক
৩১ আগস্ট ২০২৩, ০০:১০আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১৩:২৬

যারা শিল্প-সাহিত্য চর্চা করেন, তাদের প্রায় সকলের মনেই একটা আদর্শ থাকে। নিজের সচেতন চেতনার বার্তা তারা সৃষ্টির মাঝে তুলে ধরেন। এর কালজয়ী উদাহরণ ঋতুপর্ণ ঘোষ। যিনি সেলুলয়েডের ক্যানভাসে এঁকে গেছেন এমন সব গল্প-জীবন-বাস্তবতা, যেগুলো বরাবরই থেকেছে আড়ালে-আবডালে। চেনা ছক ভেঙে নতুন পথ তৈরির এই অসামান্য সাহস আর সৃষ্টিশীলতার সুবাদেই তার ঝুলিতে এসেছিল এক ডজন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

ঋতুপর্ণের জীবন ও কাজে একটি বিষয় সবচেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে; তা হলো লিঙ্গ বৈষম্য। এই বিভাজন ভাঙতে চেয়েছেন তিনি। নিজের সিনেমায় যেমন এই বার্তা বারংবার দিয়েছেন, বাস্তব জীবনেও কথায়-সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন। তার ভাষ্য ছিল, “আমার স্বভাব-প্রণোদিত ‘অস্বাভাবিকতা’ নিয়ে আমি বাস করেছি আমার একাকীত্বের বন্দিজীবনে; আর আমার সামনে ছিল সমাজের এক বিরাট কারাগার। যেখানে ঐতিহাসিকভাবে যে কোনও নতুন প্রথাকেই প্রবেশ করতে হয়েছে দণ্ডিত বিদ্রোহীর মতো, অনেক হিংসা এবং রক্তপাতের মূল্যে।”

এই ‘নতুন প্রথা’ কিংবা ‘অস্বাভাবিকতা’ বলতে যে ঋতু নিজের যৌন পরিচয়ের ইঙ্গিত করেছেন, তা স্পষ্ট। আর এই পরিচয় প্রতিষ্ঠার জন্যই তাকে সহ্য করতে হয়েছিল নানা অবহেলা, বঞ্চনা আর সমালোচনা। তবু সেটাকে নিজের মনে ঠাঁই দেননি কখনও। ঋতু বলে গেছেন, ‘আমি নিপীড়িত, আমি অবহেলিত, আমি প্রান্তিক, মনে-মনে কখনও আমার এই অবস্থানটাকে আমি ঠাঁই দিইনি বা সমর্থনও করিনি।’

জেন্ডার-ট্যাবুর বিরুদ্ধে বড় একটি স্টেটমেন্ট ঋতুপর্ণ ঘোষের কালজয়ী সিনেমা ‘চিত্রাঙ্গদা’। যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, “চিত্রাঙ্গদা’ একটা ইচ্ছের গল্প, দ্যাট ইউ ক্যান চুজ ইয়োর জেন্ডার।”

ঋতুপর্ণ ঘোষ হঠাৎ ঋতু বন্দনার হেতু- আজ বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) তার জন্মদিন। ১৯৬৩ সালের এই দিনে কলকাতায় তার জন্ম। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি নিয়েছিলেন তিনি। কর্মজীবনের শুরুটা বিজ্ঞাপন সংস্থায় কপিরাইটার হিসেবে।

১৯৯২ সালে ‘হীরের আংটি’ দিয়ে নির্মাতা হিসেবে ঋতুপর্ণ ঘোষের অভিষেক। এরপর তিনি একে একে নির্মাণ করেছেন ‘উনিশে এপ্রিল’, ‘দহন’, ‘তিতলি’, ‘বাড়িওয়ালি’, ‘অসুখ’, ‘চোখের বালি’, ‘রেইনকোট’, ‘দোসর’, ‘দ্য লাস্ট লিয়ার’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘আবহমান’, ‘চিত্রাঙ্গদা’র মতো সিনেমা। 

ডায়াবেটিস, প্যানক্রিটিটিস ও অনিদ্রায় আক্রান্ত ছিলেন ঋতুপর্ণ। এছাড়া ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট করাতে গিয়ে তার শারীরিক জটিলতা আরও বেড়ে যায়। দীর্ঘ দিন এসব জটিলতার সঙ্গে লড়ে ২০১৩ সালের ৩০ মে, মাত্র ৪৯ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এই কালজয়ী নির্মাতা। 

সূত্র: আনন্দবাজার

/কেআই/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
মনামী: সবচেয়ে সহজ মানুষ চঞ্চলদা
মনামী: সবচেয়ে সহজ মানুষ চঞ্চলদা
এবারের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র
এবারের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র
আমি চাচ্ছিলাম না, দৃশ্যটা শেষ হোক: মেরিল স্ট্রিপ
আমি চাচ্ছিলাম না, দৃশ্যটা শেষ হোক: মেরিল স্ট্রিপ
ফুল দিয়ে বরণ, রিট দিয়ে শুরু কোন্দল!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিফুল দিয়ে বরণ, রিট দিয়ে শুরু কোন্দল!
ছয় মিনিটের অভিবাদন, নিয়ম ভাঙলেন এই নায়ক
কান উৎসব ২০২৪ছয় মিনিটের অভিবাদন, নিয়ম ভাঙলেন এই নায়ক