X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১
৭৬তম কান উৎসব

মাগুরা থেকে কান উৎসবের লালগালিচায়

মাহমুদ মানজুর, কান (ফ্রান্স) থেকে
মাহমুদ মানজুর, কান (ফ্রান্স) থেকে
২৩ মে ২০২৩, ১৬:৫৩আপডেট : ২৬ মে ২০২৩, ১২:৪৩

বাংলাদেশের মাগুরা জেলা শহর থেকে বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাসম্পন্ন কান চলচ্চিত্র উৎসবের লালগালিচায় পা মাড়ালেন তানজিয়া জামান মিথিলা। পথটা সুগম ছিল না, তবে লক্ষ্য অটুট রেখে ক্রমে ছুঁয়ে যাচ্ছেন নিজের ইচ্ছেগুলো। মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২০ বিজয়ী এই মডেলের সঙ্গে ২৩ মে সকালে এসব বিষয়ে আলাপ হলো কানসৈকতে বসে।

বাংলা ট্রিবিউন: কেমন আছেন?
তানজিয়া জামান মিথিলা: দারুণ সময় কাটাচ্ছি। এটা তো একটা চলচ্চিত্রের সমুদ্র, সেখানে ডুবে আছি গেল তিন দিন ধরে।

বাংলা ট্রিবিউন: গতকাল (২২ মে) বিকালে ভারতীয় প্যাভিলিয়নে আপনার নতুন সিনেমার ঘোষণা দেওয়া হলো...
তানজিয়া জামান মিথিলা: ছবিটির নাম ‌‘লাইফ’। এতে আমি প্রধান চরিত্রে থাকছি। এটি একটি বাংলাদেশি বেশ সিরিয়াস গল্প।

বাংলা ট্রিবিউন: এটি আপনার দ্বিতীয় ছবি। প্রথমটি ছিল বলিউডের ‘রোহিঙ্গা’। এবারের ছবিও বলিউডের?
তানজিয়া জামান মিথিলা: এবার যৌথ প্রযোজনার ছবি। ভারত-বাংলাদেশ মিলিয়ে হচ্ছে। এটা আরও বড় প্রজেক্ট। এখানে আমার চরিত্রটি প্রধান। আশা করি দারুণ কিছুই হবে।

‘লাইফ’ ছবির কলাকুশলীদের সঙ্গে তানজিয়া জামান মিথিলা (ছবি: বাংলা ট্রিবিউন)

বাংলা ট্রিবিউন: ‘লাইফ’ প্রসঙ্গে আরেকটু বিস্তারিত বলা যাবে? এর শুটিং কবে থেকে শুরু হবে আর গল্পটা কেমন।
তানজিয়া জামান মিথিলা: ছবিটির শুটিং শুরু হবে দুই মাসের মধ্যে। গল্পটা প্রসঙ্গে বলা বারণ আছে। তবে এটুকু বলছি, খুবই স্যাড ও সিরিয়াস একটি গল্প। এবং গল্পটা বাংলাদেশের এবং আমাকে ঘিরেই। এরসঙ্গে রয়েছে ভারত ও শ্রীলঙ্কার নতুন প্রজন্মের নির্মাতারা। ফলে এই প্রজেক্ট আমার জন্য টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে আন্তর্জাতিকভাবে।

বাংলা ট্রিবিউন: কানে কি শুধু ‘লাইফ’-এর জন্যই এসেছেন, নাকি আরও পরিকল্পনা আছে?
তানজিয়া জামান মিথিলা: মূলত এটাই উদ্দেশ্য। তবে আরেকটি বড় কারণ, লালগালিচায় হাঁটা। যে স্বপ্নটি ২২ মে রাতে পূর্ণ হলো। আমরা ‘লাইফ’ টিমের সবাই মিলে রাতে লালগালিচায় হেঁটেছি। এটা আসলে অন্যরকম একটা অনুভূতি। এই স্বপ্ন পৃথিবীর সব অভিনেত্রীর মধ্যেই থাকে বলে আমি মনে করি। সেটি এবার পূরণ হলো আমার।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার ছবির ঘোষণা হলো ভারতীয় প্যাভিলিয়ন থেকে। লালগালিচায় হাঁটলেন ভারতীয় কলাকুশলীর সঙ্গে। সময়ও কাটাচ্ছেন ভারতীয় ঘরানায়। এসেছেন কিন্তু ঢাকা থেকে! একা লাগে না? কারণ, ঢাকার কোনও অফিসিয়াল প্রতিচ্ছবি বা প্রতিনিধি এই উৎসবে নেই।
তানজিয়া জামান মিথিলা: একা লাগে। আবার লাগেও না। কারণ, আমি তো আসলে কাজে এসেছি, ঘোরার জন্য নয়। কাজ করতে এসে ঘুরছি, এটাও ঠিক। আমি উপভোগ করছি। তবে, প্রথমদিন থেকে আপনাদের পেলে আরও ভালো লাগতো। একই শহরে থেকেও আমাদের দেখা হলো তিন দিন পর। আর দেশের প্রতিনিধিত্বর বিষয়ে বলবো, এর আগে অফিসিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশ থেকে এসেছে বাঁধন আপুর ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, এবার মার্শে দ্যু ফিল্মে এলো পরী আপুর ‘মা’। আমি নিজেও এলাম ‘লাইফ’ নিয়ে। ফলে হতাশার কিছু নেই। আমার বিশ্বাস এই কার্যক্রমগুলো সামনে আরও বাড়বে। বাংলাদেশের সিনেমা আরও আসবে, আমরাও আরও অনেকে আসবো। আমার মনে হচ্ছে, শুরুটা তো হলো। আমি আসলে আশাবাদী মানুষ।

‘লাইফ’ ছবির কলাকুশলীদের সঙ্গে তানজিয়া জামান মিথিলা (ছবি: বাংলা ট্রিবিউন)

বাংলা ট্রিবিউন: কান নিয়ে আর কী পরিকল্পনা আছে এবারের সফরে?
তানজিয়া জামান মিথিলা: প্রথম এলাম। ইচ্ছে আছে আরও দুই দিন থাকার। ২৫ কিংবা ২৬ মে ইতালির মিলান যাবো বন্ধুর কাছে। সেখানে তিন-চার দিন বেড়িয়ে ঢাকায় ফিরবো। এরমধ্যে বিভিন্ন দেশের প্রোডাকশন হাউজের সঙ্গে বসবো। পরিকল্পনা শেয়ার করবো। কান পৃথিবীর সিনেমা বাজারের সবচেয়ে বড় জায়গা। চেষ্টা করছি নিজের কানেক্টিভিটি আরও বাড়ানোর। কারণ, আমার লক্ষ্য দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রজেক্টে নিজেকে যুক্ত রাখা। ‘লাইফ’ সিনেমাটি তারই অংশ।

বাংলা ট্রিবিউন: ঢাকা থেকে কানে এসেছেন ২০ মে। গেল তিন দিনে ‘লাইফ’-এর ঘোষণা আর লালগালিচার বাইরে কী করলেন?
তানজিয়া জামান মিথিলা: অনেক মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে। অনেক প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছি। অনেকের সঙ্গে পরিচয় হচ্ছে। যে ভারতীয় টিম আমাদের ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ছবির কাজ করেছে, তাদের সঙ্গে এবার পরিচয় হলো। আপনার সঙ্গে কথা বলার আগমুহূর্তে দেখা হলো শ্রুতি হাসানের সঙ্গে। এগুলোই তো আমার জন্য বড় প্রাপ্তি। আমার এই জীবনটা তো মাত্র শুরু, তাই না!

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২০’ বিজয়ী। এরপর ‘রোহিঙ্গা’ ছবি। এখন আছেন কানে। এর বাইরে আপনার জীবনের গল্প জানতে চাই কানসৈকতে বসে। ব্যক্তিগত নয়, ক্যারিয়ারের।
তানজিয়া জামান মিথিলা: আমার গল্পটা অনেক লম্বা। সেটা বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে। তবে ছোট করে বলি। খুব ছোট জেলা শহর মাগুরা থেকে উঠে আসা মেয়ে আমি। সত্যি বলতে, মাগুরা থেকেই আমার স্বপ্নটা ছিল বেশ বড়। আমি বরাবরই নিজেকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতাম। সেখান থেকে ঢাকায় এসে মডেলিং শুরু করি। মিস ইউনিভার্স টাইটেল পাই। এরপর অভিনয়ের চেষ্টা করছি। চেষ্টাটা চালিয়ে যাবো, আমৃত্যু।

বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিনিধির মুখোমুখি তানজিয়া জামান মিথিলা

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বেশ স্পস্ট। মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ, ‘রোহিঙ্গা’ ও ‘লাইফ’। তিনটি থেকে এটুকু স্পষ্ট, আপনি এগোচ্ছেন আন্তর্জাতিক পথ ধরে।
তানজিয়া জামান মিথিলা: একদম তাই। আমি প্রথমত বড়মাপের অভিনেত্রী হতে চাই। দেশ ও ইন্টারন্যাশনালি অনেক বড় পরিসরের কাজ করতে চাই। এর বাইরে আমার আর কোনও চাওয়া নেই।

বাংলা ট্রিবিউন: কানসৈকতে বসে দেশের জন্য কোনও বার্তা দিতে চান?
তানজিয়া জামান মিথিলা: অবশ্যই। দেশের মানুষের সহায়তা অনেক দরকার। কারণ আমি বাংলাদেশ নামটিকে বিশ্ব সিনেমার বাজারে আরও সমৃদ্ধ করতে চাই।

/জেএইচ/
সম্পর্কিত
অবশেষে মুক্তি পেল মিথিলার বলিউড ছবি
অবশেষে মুক্তি পেল মিথিলার বলিউড ছবি
১৫ নভেম্বর মুক্তি পাচ্ছে ঢাকাই মিথিলার বলিউড ছবি
১৫ নভেম্বর মুক্তি পাচ্ছে ঢাকাই মিথিলার বলিউড ছবি
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
থ্রিলার বনাম হরর: প্রেক্ষাগৃহে নতুন দুই সিনেমা
এ সপ্তাহের ছবিথ্রিলার বনাম হরর: প্রেক্ষাগৃহে নতুন দুই সিনেমা
পাঁচ বছরে শুরু, ৮৬-তে থামলো ডুয়ান এডির গিটার
পাঁচ বছরে শুরু, ৮৬-তে থামলো ডুয়ান এডির গিটার
ছবিটি দেখে মুগ্ধ তারকারাও!
ছবিটি দেখে মুগ্ধ তারকারাও!
দেশের পর্দায় ক্রিস্টোফার নোলানের দুই ছবি
দেশের পর্দায় ক্রিস্টোফার নোলানের দুই ছবি
ওটিটিতে উঠলো মস্কোজয়ী ‘আদিম’
ওটিটিতে উঠলো মস্কোজয়ী ‘আদিম’