তাঞ্জানিয়ায় গত বৃহস্পতিবারের ফেরিডুবিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতের সংখ্যা দুইশ' ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে লেক ভিক্টোরিয়াতে এই ফেরিডুবির ঘটনা ঘটে। ১০০ জনের ধারণক্ষমতার ফেরিটিতে ৩০০ জনের মতো আরোহী ছিল বলে ধারণা কর্মকর্তাদের।
তাঞ্জানিয়ার ইলেক্ট্রিকাল, মেকানিকালা ও সেবা সংস্থা জানায়, বৃহস্পতিবার বিকালে উকারা দ্বীপের কাছে এমভি নিয়েরে নামের ফেরিটি ডুবে যায়। উকেরেই জেলা প্রশাসনের প্রধান জর্জ নিয়ামাহা বলেন, ‘ফেরিতে শতাধিক যাত্রী ছিল। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছি আমরা।’
ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি যাত্রী নিয়ে ফেরিটি যখন উইকেরেভি দ্বীপের একটি ডকে ভিড়তে যাচ্ছিল তখন যাত্রীরা সবাই এক পাশে অবস্থান নিলে এটি উল্টে যায়। মূলত এর ফলেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। ফেরিতে ভুট্টা, কলা ও সিমেন্টও নেওয়া হচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার প্রাথমিকভাবে ৪৪ জনের লাশ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রাতে বিরতির পর শুক্রবার সকালে লেকে ফের উদ্ধার অভিযান শুরু হওয়ার পর বাড়তে থাকে লাশের সংখ্যা।
স্বজনদের খোঁজে দুর্ঘটনাস্থল সংলগ্ন এলাকায় ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ। তাদের একজন দোমিনা মাউয়া জানান, ফেরিতে তার বাবা ও ছোট ভাই ছিল। ভাইয়ের জন্য একটি স্কুল ইউনিফর্ম ও অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতে বুগোরোরা হাটে গিয়েছিল তারা।
ফেরিডুবিতে প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে দেশবাসীকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন তাঞ্জানিয়ার প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি। একইসঙ্গে ফেরিটির ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
অতিরিক্ত যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের কারণেই দেশটিতে ইতোপূর্বেও এ ধরনের দুর্ঘটনার নজির রয়েছে। ২০১২ সালে দেশটির আধা স্বায়ত্তশাসিত জানজিবার দ্বীপে একটি ফেরি ডুবে অন্তত ১৪৫ জনের মৃত্যু হয়। তার আগে ১৯৯৬ সালে ভিক্টোরিয়া লেকের এই বন্দরের কাছেই একটি ফেরি ডুবে কমপক্ষে ৫০০ মানুষ প্রাণ হারান। সূত্র: ইন্ডিপেনডেন্ট, ডিডব্লিউ, পার্স টুডে।