মিসরের হয়ে বিদেশে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ বিরোধী দল গঠনের আহ্বান জানিয়েছে মুসলিম ব্রাদারহুড। ২৫ জানুয়ারি, ২০১১ সালের বিপ্লবের আট বছর পূর্তি উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে দলটি জানায়, সামরিক শাসন থেকে স্বাধীনতার জন্য ও রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোট প্রয়োজন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
২০১৩ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির ক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশটিতে নির্বাসনে রয়েছে সবচেয়ে পুরাতন ও প্রভাবশালী ইসলামি সংগঠন দ্য মুসলিম ব্রাদারহুড। তারা বিদেশে থাকা মিসরীয় বিচারকদের আহ্বান জানান তারা যেন সাংবিধানিক একটি কাঠামোর নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন। ব্রাদারহুড দাবি করে, বিদেশে থাকা মিসরীয়রা দেশের মধ্যে বিরোধী দল গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়, মিসরীয় বিপ্লব সমর্থন ও বিরোধীদলীয় স্বার্থরক্ষায় সহিংসতা থেকে দূরে থাকা জরুরি। মিসরে নিষিদ্ধ এই দলটি সংবিধানের ১৯২৩ নাম্বার অনুচ্ছেদ সামনে এনে জনসাধারণের স্বাধীনতা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার কথা বলে।
২০১২ সালের ৩০ জুন মিসরের নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের মাথায় ২০১৩ সালের ৩ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন মোহাম্মদ মুরসি। সেনাপ্রধান জেনারেল সিসির ক্ষমতা দখলের পক্ষে সমর্থন ছিল ইসরায়েল, সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের। সে সময় মুরসির সমর্থকরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছিলে। তখন তাদের ওপর চড়াও হয়েছিল সরকারি বাহিনী। নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ব্রাদারহুডকে। আর মুরসির ঠিকানা হয়েছিল কারাগারে। সাজাপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে হত্যার মতো অভিযোগ ছাড়াও সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল। সরকার দাবি করেছিল, বিক্ষোভকারীদের অনেকের কাছে ছিল অস্ত্র এবং তারা নিরাপত্তা বাহিনীর আট সদস্যকে হত্যা করেছে। যদিও প্রথমে সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর ৪০ জন সদস্য নিহত হওয়ার দাবি করেছিল।
এরপর থেকে অনেক মানবাধিকার কর্মী ও এনজিও সরকারের রোষানলে পড়ে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, দেশটিতে প্রায় ৬০ হাজার রাজনৈতিক কর্মী আটক রয়েছেন।