X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

মিয়ানমারে বিদ্বেষী প্রচারণা রুখতে ফেসবুককে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান মার্কিন সিনেটের

ব্রজেশ উপাধ্যায়, যুক্তরাষ্ট্র
২৭ জুন ২০১৯, ১০:৪৭আপডেট : ২৭ জুন ২০১৯, ১০:৪৮

মিয়ানমারে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রুখতে ফেসবুককে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাতে মার্কিন সিনেটে একটি বিল পাশ করেছে প্রভাবশালী এক উপ-কমিটি। সিনেটর এডওয়ার্ড মার্কির প্রস্তাবিত ওই বিলে ফেসবুক ও অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে ছড়ানো বিদ্বেষ, বৈষম্য ও সহিংস বক্তব্য ঠেকানোর আহ্বান জানানো হয়। 

মিয়ানমারে বিদ্বেষী প্রচারণা রুখতে ফেসবুককে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান মার্কিন সিনেটের

গত বছর এপ্রিলেই জাতিসংঘের সমালোচনার মুখে পড়েছিল ফেসবুক। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার পেছনে ফেসবুক ব্যবহারের "বড় ধরনের ভূমিকা ছিল"। মানবাধিকার সংস্থা ও গবেষকরা আগেই সতর্ক করে বলেছিলেন, ২০১৩ সাল থেকে মিয়ানমারে ফেসবুক ব্যবহার করে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে। মিয়ানমারে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ কোটি ৮০ লাখ। কিন্তু এই সংকট সমাধানে সফল হয়নি ফেসবুক।

এক বিবৃতিতে সিনেটর মার্কি বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে ফেসবুক। জাতিসংঘসহ অনেক সংগঠন রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন ও অনলাইনে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের যোগসাজশ খুঁজে পেয়েছেন। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে দাবি করলেও ফেসবুকের উচিত এসব সমস্যা সমাধানে আরও পদক্ষেপ নেওয়া। বিশেষ করে মিয়ানমারে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আরও কাজ করা উচিত ফেসবুকের।

ফেসবুক থেকে তিনটি গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রশ্ন তোলেন সিনেটর মার্কি। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তে গোষ্ঠীগুলো সুশীল সমাজ, সরকারি মধ্যস্থতাকারী, আন্তর্জাতিক পর্যববেক্ষক এবংআন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযাগ করতে পারবে নো। ফলে জাতীয় ঐক্য থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

চলতি বছর শুরুর দিকে সিনেট পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রস্তাবিত একটি বিলের অংশই সর্বশেষ এই সংশোধনীটি। সেখানে বলা হয়, মিয়ানমার ও বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে।

এই প্রস্তাবে মার্কিন সরকারকে আশিয়ানসহ অন্যান্য আঞ্চলিক সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার কথা বলা হয় যেন তারা রাখাইনে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন করে, রোহিঙ্গাদের ওপর নিধনযজ্ঞ চালানোর জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনে এবং রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছাপ্রত্যাবাসন নিশ্চিত করে।

প্রস্তাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বান জানানো হয় যে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাং, ভাইস সিনিয়র জেনারেল সো উইন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং অং ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থান ওসহ অন্যান্য সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধ কিংবা গণহত্যা বলে বিবেচিত হবে কি না তা যেন খতিয়ে দেখা হয়। 

এছাড়া মার্কিন সরকারকে নিশ্চিত করতে বলা হয় তারা যেন মিয়ানমার ও বাংলাদেশে তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখে। ২০২০ অর্থবছরে পররাষ্ট্র ও বিদেশ নীতি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে যেন সেই প্রতিফলন ঘটে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। এমন বাস্তবতায় নিধনযজ্ঞের বলি হয়ে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় দশ লাখে। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছে। 

 

/এমএইচ/
সম্পর্কিত
চীন সফর নিয়ে বিশেষ সংবাদ সম্মেলনরোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের অধিকতর কার্যকর ভূমিকা চেয়েছে বিএনপি
বৈশ্বিক অনুদান কমায় রোহিঙ্গা শিশুদের পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে
বিপুল পরিমাণ মাদকসহ রোহিঙ্গা তরুণ আটক
সর্বশেষ খবর
কূটনীতি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে চীন-জার্মানির কৌশলগত সংলাপ
কূটনীতি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে চীন-জার্মানির কৌশলগত সংলাপ
বাংলাদেশি ২০ পাসপোর্টসহ ভারতীয় ট্রাকচালক আটক
বাংলাদেশি ২০ পাসপোর্টসহ ভারতীয় ট্রাকচালক আটক
করবিন-সুলতানার দল কি ব্রিটিশ রাজনী‌তি‌তে ভূমিকা রাখ‌তে পার‌বে?
করবিন-সুলতানার দল কি ব্রিটিশ রাজনী‌তি‌তে ভূমিকা রাখ‌তে পার‌বে?
সারা দেশে আগামী কয়েকদিন বাড়তে পারে বৃষ্টির প্রবণতা
সারা দেশে আগামী কয়েকদিন বাড়তে পারে বৃষ্টির প্রবণতা
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল