মার্কিন বিচার বিভাগ জানিয়েছে, মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী পাচারের দোষ স্বীকার করেছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মোক্তার হোসেন (৩১) নামের এই ব্যক্তি অর্থের বিনিময়ে ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত টেক্সাস সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের ষড়যন্ত্র ও পাচার করেছে। মার্কিন আদালত তার দোষ স্বীকার গ্রহণ করেছে। তবে তার সাজা ঘোষণার দিন এখনও নির্ধারিত হয়নি।
মার্কিন বিচার বিভাগ জানিয়েছে, মোক্তার হোসেন এক সময়ে মেক্সিকোর মন্টেরারি শহরে বসবাস করতো। আর সেখানেই অবৈধ অভিবাসীদের এনে জমা করা হতো। এসব অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর শেষ ধাপ শুরু হতো সেখান থেকে। গাড়ি চালকদের অর্থ দিয়ে তাদের মাধ্যমে এসব অবৈধ অভিবাসীদের মার্কিন সীমান্তে নিয়ে আসতো মোক্তার আর কিভাবে রিও গ্রান্দে নদী পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে হবে সে বিষয়ে অভিবাসীদের নির্দেশনা দিত।
মার্কিন বিচার বিভাগের অপরাধ শাখার সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রায়ান এ.বেঞ্জকোস্কি বলেন, ‘মানব পাচার একটি জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি। আজকের দোষ স্বীকার স্পষ্ট করেছে যে যারা লাভের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে অবৈধ ব্যক্তিদের নিয়ে আসবে তাদের আদালতে পরিণাম ভোগ করতে হবে’। মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত ১৪ জন বাংলাদেশিকে লারেদো শহর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করিয়েছে।
গত বছরের এপ্রিলে বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত খবরে জানানো হয় মেক্সিকো সীমান্তবর্তী টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের লারেদো শহর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি আটক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্য সীমান্ত সেক্টরের চেয়ে এই সেক্টরেই সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি আটকের ঘটনা ঘটে বলে জানানো হয় ওই খবরে। ২০১৮ অর্থবছরে লারেদো সেক্টরের কর্মকর্তারা ৬৬৮ জন বাংলাদেশি অভিবাসীকে আটক করে। আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা ২৭০ শতাংশ বেশি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব অভিবাসীরা প্রত্যেকে প্রায় ২৭ হাজার মার্কিন ডলার মানব পাচারকারী চক্রকে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী প্রবেশের পথ ‘লারেদো’
লারেদো শহরের দক্ষিণে রিও গ্রান্দে নদী পার হয়ে এসব অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করে। নদী পার হতে গিয়ে বেশ কয়েক জন বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আর গত বছর অন্তত চার বাংলাদেশিকে ডুবে যাওয়ার সময় উদ্ধার করেছে সীমান্তরক্ষীরা।
তবে নির্দিষ্ট এই সীমান্ত দিয়ে কেন সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করে তা জানা যায়নি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চক্র সংশ্লিষ্ট পাচারকারীরা এসব রুট ঠিক করে আর তারাই সিদ্ধান্ত নেয় কারা কোন সীমান্ত পাড়ি দেবে।